মোদির জিত, আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ বৈধ, ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লি,৭ নভেম্বর– দরিদ্রদের জন্য সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত যে বৈধ, তা মেনে নিলেন শীর্ষ আদালতের ৫ বিচারপতির মধ্যে ৩ জনই। সুপ্রিম কোর্টে যুগান্তকারী জিত মোদির। আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণিকেও সংরক্ষণের আওতায় আনার পক্ষে রায় দিল শীর্ষ আদালত। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা জনতার জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা যাবে। এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক তকমা দেওয়া যায় না। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পরে সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষ। 

প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত-সহ পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজন সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করেন। প্রধান বিচারপতি অবশ্য এই সংরক্ষণকে সমর্থন করেননি। সংরক্ষণের পক্ষে থাকা বিচারপতিদের মত, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ ব্যবস্থারও পরিবর্তন আনা দরকার। তবে প্রধান বিচারপতির মতে, তপশিলি জাতির মানুষের মধ্যেও অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা আর্থিক ভাবে দুর্বল। কিন্তু নয়া সংরক্ষণ ব্যবস্থায় তপশিলি জাতির প্রতি অবিচার করা হবে।

সংবিধান সংশোধনের পরেই প্রশ্ন উঠেছিল, সংবিধানে তো অনগ্রসর বলতে কেবলমাত্র শিক্ষাগত ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়াদের কথা বলা হয়েছে। আর্থিক অবস্থা নিয়ে সংবিধানে কিছু বলা হয়নি। তাহলে এই সংরক্ষণ অসাংবিধানিক। সেই সঙ্গে জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য নির্ধারিত আসন কমিয়ে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র, এমনও দাবি করা হয়েছিল। তবে কেন্দ্র জানিয়েছিল, জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য বরাদ্দ ৫০ শতাংশ আসনের কোনও কাটছাঁট হবে না। আলাদা করেই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জন্য।   

জাতির ভিত্তিতে অনগ্রসরদের জন্য সংরক্ষণ থাকলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সংরক্ষণ থাকবে না কেন? এই তর্ক বহুদিনের। ২০১৯ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আর্থিক সংরক্ষণকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে আর্থিক সংরক্ষণের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের করা হয়। প্রায় ৪০টি মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলার শুনানি শেষ হয়। সোমবার মামলার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।