চলন্ত বাসে আগুন জীবন্ত দগ্ধ ২৫ জনের মৃত্যু 

বাসে অগ্নিদগ্ধদের ৫ লক্ষ ক্ষতিপূরণ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর  
মুম্বই, ১ জুলাই —  মহারাষ্ট্রের সমৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ২৫ জন। চলন্ত বাসে আচমকাই আগুন লেগে যাওয়াতেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে গেলেন এই ২৫ জন যাত্রী।

জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের বুলধানার কাছে শনিবার রাত দুটো নাগাদ ৩২ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ছুটে যাচ্ছিল সমৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। আচমকাই বাসে আগুন লেগে যায়। ঘুমের মধ্যেই আগুনের গ্রাসে পড়েন বাসের যাত্রীরা। বসে যাত্রীদের মধ্যে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি যাত্রীদের গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা।

এই আগুন আচমকা কীভাবে লাগল তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা যাচ্ছে যে টায়ার ফাটা থেকেই আগুন লেগে যায় ওই বাসে।

জানা গেছে বাসটি পুনে যাচ্ছিল। বাসের চালকও গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি হাসপাতালে। ঘটনাটির পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।  


দুর্ঘটনার খবর জানার পর নিহতদের পরিবার এবং আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘটনায় মৃতদেহ পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।  

ইতিমধ্যেই নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। পাশাপাশি আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার দায়িত্বও নেওয়া হয়েছে। এদিনই সমৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়েতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একান্ত শিণ্ডে এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস। ফড়নবিস জানান, মৃতদেহগুলি পুড়ে যাওয়ায় তা শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই ডিএসএ পরীক্ষার মাধ্যমে দেহ শনাক্ত করতে হবে। তবে তিনি এও স্পষ্ট করে দেন, এই দুর্ঘটনার জন্য রাস্তার পরিকাঠামো দায়ী নয়।

জানা গিয়েছে, দাউদাউ করে আগুন ধরে গিয়েছিল বাসে। কয়েকজন কোনও মতে বাসের সামনের কাচ ভেঙে প্রাণটুকু হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন অভিশপ্ত বাস থেকে। তাঁদেরই একজন জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ যাত্রীরা যখন রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলির থেকে সাহায্য চাইছিলেন, তখন তাঁদের আর্ত চিৎকার শুনেও কেউ দাঁড়ায়নি, বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি।

ওই যাত্রী জানিয়েছেন, তিনি বাসের সামনের দিকে চালকের আসনের কাছেই বসেছিলেন। তাই আগুন লেগে যাওয়ার পরমুহূর্তে কোনও মতে তিনি এবং আর একজন মিলে বাসের সামনের কাচের জানলা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন। একইভাবে বেরিয়ে আসেন আরও ৩ জন। অর্ধদগ্ধ অবস্থায় বাইরে বেরিয়েই রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ি দাঁড় করিয়ে সাহায্য চাইছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু কোনও গাড়িই নাকি সাহায্য করার জন্য দাঁড়ায়নি।