মুখ্যমন্ত্রিত্ব পেতে মরিয়া ‘মামা’,  মোদী-শাহকে চ্যালেঞ্জ জনতার দরবারে 

ভোপাল, ৭ অক্টোবর — যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট দোরগোড়ায় তার মধ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে শুধু মধ্যপ্রদেশেই। সেখানে তিনটি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও একমাত্র বুধনী আসন ছাড়া সব কটি আসনের জন্য তিনটি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে পদ্ম শিবিরের দিল্লির নেতৃত্ব । কিন্তু একটিতেও নাম নেই চারবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের। আর দলের এই বার্তাতেই স্পষ্ট যে শিবরাজ দলের মুখ্যমন্ত্রী মুখ নন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় মুখ্যমন্ত্রী হাজির থাকলেও শিবরাদের নাম মুখে আনছেন না কেউ। এমনকী যৌথ সভার মঞ্চ থেকে শিবরাজের নামে জয়ধ্বনী দেওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

শনি-রবিবারের মধ্যেই মধ্যপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিতে পারে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে দল তাঁকে বেঁছে না নেওয়ায় শিবরাজ সিং চৌহান পাল্টা কৌশল নিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর, যা দলে মোদি-শাহ জুটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আঁচ বলেই অনেকে মনে করছেন অনেকে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ প্রতিটি সভায় জনতার উদ্দেশে বলছেন, ‘আমি চারবারের মুখ্যমন্ত্রী। ২০০৩ থেকে আপনাদের সেবা করছি। স্পষ্ট করে বলুন আপনারা আমার কাজে সন্তুষ্ট কি না। হ্যাঁ বা না বলে উত্তর দিন।’

একথা ঠিক, মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে শিবরাজের বড় জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন সফল মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। বিজেপি এবং আরএসএসে একটা সময় নরেন্দ্র মোদীর থেকেও শিবরাজের গুরুত্ব বেশি ছিল। ২০১৪-তে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে লালকৃষ্ণ আদবানির বিকল্প হিসাবে প্রয়াত সুষমা স্বরাজ এবং শিবরাজের নামই গোড়ায় আলোচনায় ছিল। পরে কট্টর হিন্দুত্বের মুখ নরেন্দ্র মোদীকে বেছে নেয় দল। যদিও গুজরাতে মোদীর তুলনায় মধ্যপ্রদেশে শিবরাজের কাজের রেকর্ড ভাল ছিল বলে দলের অনেকেই মনে করতেন।


শিবরাজের কথা শুনে সর্বত্রই জনতা তুমুল উৎসাহ ভরে হ্যাঁ বলেছে। শুরু হয় মামার নামে স্লোগান। মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে মামা নামেই জনপ্রিয় এই বিজেপি নেতা। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে উঠে ভাল কাজের তালিকা পাঠ করে জনতার উদ্দেশে জানতে বলেছেন, ‘সত্যি করে বলুন, এই সব প্রকল্পের সুবিধা আপনারা পেয়েছেন কী পাননি? আরও বলেছেন, ‘আমার একটাই সংকল্প, আপনাদের সেবা করা। বুকে হাত দিয়ে বলুন সংকল্প আমি রক্ষা করতে পেরেছি, কী পারিনি। বলুন, আমাকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে চান কী চান না।’

শিবরাজের বক্তব্যের ভিডিও রাজ্যে ভাইরাল করে দিয়েছে দলে তাঁর অনুগামীরা। আর সেটাই হয়ে উঠেছে রাজ্য-রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য। চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন, চারবারের মুখ্যমন্ত্রী আসলে মোদী-শাহ জুটিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত শিবরাজকে টিকিট না দেওয়া হলে তিনি প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করতে পারেন।