সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার উল্টো হেঁটে এসসি-এসটি কোটা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কর্নাটকের বিজেপি সরকারের

বেঙ্গালুরু, ৮ অক্টোবর– একই দলে দুই সুর। একজন বিজেপির পথপ্রদর্শক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভগবত যখন বর্ণ ব্যবস্থার অবসান চেয়ে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন, তখন কর্নাটকে সেই দলের সরকার চাকরি, শিক্ষায় কোটাকেই হাতিয়ার করছে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের মন জয়ে। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে কর্ণাটকের বিজেপি সরকার কোটার পরিমান বৃদ্ধি নিয়ে বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে।

রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত করেছে, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের সংরক্ষণের সীমা যথাক্রমে ১৫ থেকে বৃদ্ধি করে ১৭ এবং তিন থেকে বাড়িয়ে সাত করবে। বিচারপতি এইচএন নাগমোহন দাস কমিশনের রিপোর্টে এমনই সুপারিশ করা হয়েছিল যা বিজেপি সরকার কার্যকর করতে চলেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোম্মাই একটি সর্বদলীয় বৈঠকের সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। কংগ্রেস ও জনতা দল-এস নেতারাও বৈঠকে অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জনসংখ্যার ভিত্তিতে এসসি/এসটি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বিচারপতি নাগমোহন দাস কমিশনের সুপারিশগুলি আজ সর্বদলীয় বৈঠকে আলোচনার পর অনুমোদন করা হয়েছে।’ বোম্মাই বলেন, তাঁর দল বিজেপি আগেই এই ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিল।’


ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া যাত্রার খানিক সম্পর্ক রয়েছে। কর্নাটকে যে ৬০টি বিধানসভা এলাকার ভিতর দিয়ে রাহুলের ভারত জোড়া যাত্রা অগ্রসর হচ্ছে সেগুলিতে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বাস তুলনামূলকভাবে বেশি। রাহুল ভাল সাড়াও পাচ্ছেন। সেই কারণেই ভারত জোড়া অভিযান চালাকালেই তফসিলি জাতি, উপজাতিদের সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করা হল। রাহুলের মোকাবিলায় এটা বিজেপির মাস্টার স্ট্রোক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

গতকালই আরএসএস সুপ্রিমো মোহন ভাগবত জান-বর্ণের রাজনীতির অবসান চেয়ে জোর সওয়াল করেন। কয়েক বছর যাবৎ তিনি সংরক্ষণ ব্যবস্থার অবসান চেয়েও গলা ফাটাচ্ছেন। কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে বিজেপিও যে কোটা-রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে নারাজ, কর্নাটক সরকারের সিদ্ধান্তে তা স্পষ্ট।

আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ কর্নাটকে বিধানসভার ভোট। এখনও সেখানে বিরোধীদের জোট বা বোঝাপড়া কোনওটাই হয়নি। তা সত্ত্বেও স্বস্তিতে নেই বিজেপি সরকার।