দুদিন পরও সংসদে নিরাপত্তা নিয়ে চুপ অমিত

দিল্লি, ১৫ ডিসেম্বর – লোকসভার অন্দরে হানাদারদের আক্রমণ বুঝিয়ে দিয়েছে কতটা ঢিলেঢালা নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢক্কানিনাদ করে সংসদ ভবনের উদ্বোধন, অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, সবকিছুই  ম্লান হয়ে গিয়েছে সংসদ ভবন আক্রমণের ঘটনায়। মুখ পুড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বিষয়ে নিশ্চুপ। লোকসভার ঘটনায় যখন বিরোধী শিবিরের সাংসদরা লাগাতার তাঁর বিবৃতি দাবি করছেন তখনও এই ব্যাপারে মুখ খোলেননি শাহ। এর  জেরে  ১৫  জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ডও হতে হয়েছে। তার পর দু’দিন কেটে গেলেও, এখনও পর্যন্ত সংসদে বিবৃতি দেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। নিরাপত্তায় গাফিলতির কথা মেনে নিলেও, বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করার জন্য বিরোধীদেরই আক্রমণ করলেন। শাহ বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। লোকসভার অধ্যক্ষ এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। বিরোধীরা এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন। আমি বলছি না যে কোনও গাফিলতি ছিল না। গাফিলতি নিশ্চয়ই হয়েছে। তাই এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এটা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।”

শাহ আরও বলেন, “সবাই জানেন, সংসদের নিরাপত্তা লোকসভা অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন। অধ্যক্ষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন। আমরা একটি কমিটি তৈরি করেছি। কিছুদিনের মধ্যে এর রিপোর্ট অধ্যক্ষের কাছে যাবে। এরকম যতগুলি ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ৪০টি ঘটনা,  স্লোগানিং থেকে শুরু করে পিস্তল নিয়ে ঢুকে পড়া, সংসদের মধ্যে ঢুকে পড়া, প্রত্যেক বারই অধ্যক্ষই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। কমিটি গড়ে তদন্ত করিয়েছেন। আমরা এফআইআর দায়ের করেছি। তদন্ত কমিটিও তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় ১৫-২০ দিনের মধ্যে কমিটি অধ্যক্ষের কছে রিপোর্ট জমা দেবে। আমি নিশ্চিত করছি যে অধ্যক্ষ কমিটিকে তদন্তের পাশাপাশি ভবিষ্যতে লোকসভার নিরাপত্তা কিভাবে আরো কঠোর করা যায় সেই দায়িত্বও দিয়েছেন।”

বুধবার লোকসভা এবং সংসদের বাইরে ওই ঘটনার পর থেকেই, নতুন সংসদভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিনহার  দেওয়া পাস নিয়ে ভিতরে ঢুকেছিলেন হানাদাররা। তাই প্রতাপের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করার দাবি উঠছে। কিন্তু শাহের বক্তব্য, “আমি দেশের নাগরিকদের আশ্বাস দিচ্ছি, আগামী দিনে সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে নিশ্ছিদ্র হয়, সেদিকে নজর রাখব। নিরাপত্তায় কোনও গলদ থাকা উচিত নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে গলদ দেখা গিয়েছে। তাই পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করা আমাদের দায়িত্ব। আমার সকলের কাছে আবেদন, এই বিষয়টিকে অহেতুক রাজনৈতিক ইস্যু বানাবেন না।”


কিন্তু দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি না দিয়ে, বেসরকারি মাধ্যমে কেন বলছেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী সাংসদরা। কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, “দিল্লি পুলিশ এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তায় দায়িত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বাইরে চ্যানেলে কথা বলছেন, সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিচ্ছেন। সংসদীয় ব্যবস্থায়  সংসদে জবাবদিহি করতে বাধ্য উনি।’