মণিপুর নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট খারিজ করল দিল্লি

দিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর – মণিপুর নিয়ে বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। মহিলাদের উপর যে অকথ্য নির্যাতন ঘটেছে তাতে তাঁরা বিস্মিত। যদিও মণিপুর নিয়ে এই রিপোর্টকে ‘বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিয়ে তা খারিজ করেছে ভারত।  

উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, মণিপুরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। মণিপুরে গত পাঁচ মাস ধরে হিংসার আগুন জ্বলছে। সেনা মোতায়েন করার পরও থেকে থেকেই হিংসার আগুন নেভেনি। শান্তি ফেরাতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকেও। এই প্রেক্ষাপটে মণিপুরে ‘মানবাধিকার হনন’ ও সরকারের ‘অপর্যাপ্ত’ পদক্ষেপের অভিযোগ তুলে রিপোর্টে মোদি সরকারকে দুষেছেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা। পালটা, নয়াদিল্লির কড়া কথা, ওই রিপোর্ট ‘বিভ্রান্তিকর’। ‘পূর্ববর্তী ধারণার বশবর্তী’ হয়ে তা পেশ করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ২৯ আগস্ট মণিপুর হিংসা নিয়ে ভারত সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট পেশ করেন রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ‘স্পেশ্যাল প্রসিডিউর ম্যানডেট হোল্ডার’ বা বিশেষ অধিকার প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের পেশ করা ‘ইন্ডিয়া: ইউএন এক্সপার্টস অ্যালার্মড বাই কনটিনিউইং অ্যাবিউসেস ইন মণিপুর’ শীর্ষক রিপোর্টে মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘মণিপুরে মহিলাদের বিবস্ত্র করে হাঁটানো, গণধর্ষণ, হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠছে। মানবাধিকার হনন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এত জটিল হওয়া সত্ত্বেও ভারত সরকার যথাযথ ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’গণধর্ষণ, রাস্তায় বিবস্ত্র করে হাঁটানো, নির্মমভাবে মহিলাদের মারধর করা, এমনকি জীবন্ত অবস্থায় মহিলাদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগের খবরে শিউরে উঠেছেন বিশেষজ্ঞরা।   

এই রিপোর্টে চরম ক্ষুব্ধ মোদি সরকার। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি দল। নয়াদিল্লির সাফ কথা, ‘ওই রিপোর্ট বিভ্রান্তিকর। যাঁরা রিপোর্ট পেশ করেছেন মণিপুরের ঘটনা বা সেখানে সরকার কী করছে তা নিয়ে কোনও সম্যক ধারণা নেই। ফলে  এসমস্তই ভিত্তিহীন। মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা বজায় রয়েছে। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে তথ্যের উপর নির্ভর করে রিপোর্ট পেশ করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত পাঁচ মাস ধরে জাতিদাঙ্গার আগুনে জর্জরিত উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। প্রতিদিনই  সেই রাজ্য থেকে সংঘর্ষ ও রক্ত ঝরার খবর মেলে। এখনও পর্যন্ত সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০ , আহত অসংখ্য।