উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ‘ডিপফেক পর্নোগ্রাফি ‘ , সতর্ক করা হল গুগল , ইউটিউবকে 

৯ ডিসেম্বর – ‘ডিপফেক’ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিলই । এবার তা লাগামছাড়া পথে পা বাড়াল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর দৌলতে শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে যেমন নানাভাবে সহায়ক হয়েছে, তেমনি এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আবিষ্কার অনেক খারাপ দিকও বহন করে এনেছে । এআই-এর দৌলতে  ডিপফেক এবার এমন প্রযুক্তি নিয়ে এলো যেখানে যেকোন মহিলাকে নগ্ন দেখা সম্ভব। সম্প্রতিই গবেষকরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশন ও ওয়েবসাইটগুলি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে মহিলাদের ছবি থেকেই নগ্ন করা যায়, তা দ্রুত হারে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

অত্যাধুনি পিরুজক্তির ব্যবহার করে অপরাধের শাখা নানা দিকে ডালপালা মেলছে। ভাল দিকের পাশাপাশি যেভাবে তার বিপরীতে খারাপ দিকও নানা ক্ষেত্রে ধরা পড়ছে , তা সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছেই খুবই উদ্বেগের। ‘গ্রাফিকা’ নামক একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যানালাইসিস কোম্পানির সমীক্ষায় দেখা যায়, শুধু গত সেপ্টেম্বর মাসেই ২৪ মিলিয়ন বা ২.৪ কোটি মানুষ এমন ওয়েবসাইটে ক্লিক করেছেন, যেখানে মহিলাদের ছবির উপরে আঙুল ছুঁইয়ে  তাদের নগ্ন করা যায়।

এই ধরণের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে ক্রমশ তাদের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলছে। এই ধরনের ন্যুডিটি অ্যাপ বা ওয়েবসাইটগুলির  বিজ্ঞাপনের লিঙ্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।। গ্রাফিকার তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের অ্যাপের প্রস্তুতকারকরা গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলিকে মার্কেটিংয়ের জন্য ব্যবহার করছে ।

সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, অসম্মতি-সূচক এই পর্নোগ্রাফি ডিপফেক পর্নোগ্রাফিরই একটি অংশ। এই সমস্ত অ্যাপ জনপ্রিয়তা অর্জন করায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করেই এই ধরনের কাজ করা হচ্ছে। কোনও মহিলার অনুমতি ছাড়াই তাঁর ছবি ব্যবহার এবং তাকে নগ্ন করার রীতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর অপরাধ । মূলত সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই মহিলাদের ছবি বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ওপেন সোর্স থেকে নিখরচায় ছবিগুলি ডাউনলোড করে নিচ্ছে অ্যাপ প্রস্তুতকারকরা এবং সেই ছবিকেই বিকৃত করে আপলোড করা হচ্ছে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ছবিগুলি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যা দেখলে মনে হবে আসল ছবিই।

সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেল ও গুগলের ইউটিউবে এই ধরনের অ্যাপের বিজ্ঞাপন দেখা গিয়েছে। এক্স সংস্থার তরফে এই বিষয়ে কোনও জবাব না দেওয়া হলেও, গুগলের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের প্ল্যাটফর্মে এইধরনের বিজ্ঞাপন দিতে দেওয়া হয় না। অভিযোগের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং নীতি বিরুদ্ধ বিজ্ঞাপন সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।