কেরলের বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ 

তিরুঅনন্তপুরম, ২৯ অক্টোবর –   কেরলের এর্নাকুলমে প্রার্থনা চলাকালীন ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩। রবিবার মৃত্যু হয়েছিল দুজনের। সোমবার ওই ঘটনায় গুরুতর জখম ১২ বছরের কিশোরীর মৃত্যু হাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩-এ দাঁড়ায়। রবিবার রাতে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানান, ২০ সদস্যের দল ঘটনার তদন্তে নেমেছে। সোমবার নাশকতার ঘটনায় তিরুঅনন্তপুরমে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন বিজয়ন।

রবিবার কেরলের এর্নাকুলম শহরের কালামাসেরি এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রার্থনা চলাকালীন বিস্ফোরণ ঘটে। যার ফলে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। জখম হন ৫০ জন। বেশ কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর। কেরল পুলিশের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত নেমেছে করেছে এনআইএ। ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক সন্দেহভাজন আত্মসমর্পণ করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর নাম ডমিনিক মার্টিন। 

মার্টিন আত্মসমর্পণের আগে একটি ভিডিও আপলোড করেন সোশাল মিডিয়ায়। ওই ভিডিওতে জানান, জেহোভা সম্প্রদায়ের খ্রিস্টানদের আচারের বিরোধিতা করতেই হামলা চালিয়েছেন। এই সম্প্রদায়ের কার্যকলাপ বন্ধ করতে চান। তাঁর বক্তব্য, জেহোভাদের নীতি ও ধারণাগুলি দেশের জন্য ক্ষতিকর। তরুণ প্রজন্মের মনকে বিষিয়ে তুলছে এরা। সেই কারণেই নাশকতা চালিয়েছেন।
মার্টিন নাশকতার দায় স্বীকার করলেও এই বিষয়ে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার সকালে সন্দেহভাজন ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষা করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন দুবাইতে ছিলেন তিনি। সব দিক খতিয়ে দেখছেন কেরল পুলিশ এবং এএনআইয়ের গোয়েন্দারা। অন্যদিকে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বিরোধী দলগুলির তোপের মুখে পড়তে পারেন। রবিবারই বিস্ফোরণ নিয়ে বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগে গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, বিস্ফোরণের সময় কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার লোক ছিল। জানা গিয়েছে, বিস্ফোরক রাখা ছিল একটি টিফিন কৌটোতে। পুলিশের দাবি, আইইডি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে আহতদের চিকিৎসার কথা মাথায় রেখে গতকালই রাজ্যের চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করেছে কেরল সরকার। সংবাদমাধ্যমগুলির সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী আহতের সংখ্যা ৫০। বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। একাধিক হাসপাতলে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

 


বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ ও এনএসজি-কে তদন্তের নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনার পর  তিনি কথা বলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়নের সঙ্গে। বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে  জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এবং এনএসজি।  

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তুলনায় কম তীব্রতার বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। বিস্ফোরণস্থল থেকে ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক তারের টুকরো পাওয়া যায়। তবে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।কেরল পুলিশের ডিজি দরবেশ সাহেব জানান, তদন্তে সব রকম সম্ভাবনার কথাই মাথায় রাখা হচ্ছে।