স্থিতিশীল, সচেতন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সোমবারে স্থির হতে পারে বাড়ি ফেরার দিনক্ষণ 

কলকাতা, ৬ আগস্ট –  সংক্রমণমুক্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এখন অনেকটাই ভাল আছেন। শনিবার রাতে তাঁর অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পূর্ণ হয়। রক্তে ক্রিয়েটিনিনের সাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।  আপাতত আরও  ৪৮ ঘণ্টা অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া তিনি কেমন থাকেন তা দেখতে চান চিকিৎসকেরা । ফলে কবে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হতে পারে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গত শনিবার, ২৯ জুলাই শ্বাসনালীতে সংক্রমণ  ও টাইপ টু রেসপিরেটরি ফেলিওর-এর সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বর্ষীয়ান বাম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ভর্তির কয়েকঘন্টার মধ্যেই তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিতে হয়।  গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। বিশেষ চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় গত আটদিনে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। বুদ্ধদেবের  শারীরিক সমস্ত রিপোর্টও সন্তোষজনক।  কবে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে তা নিয়ে সোমবার ফের মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে ।

তবে চিকিৎসকেরা আপাতত সবথকে বেশি খেয়াল রাখছেন যাতে তাঁর নতুন করে সংক্রমণ কোনওভাবেই না হয়।  তাই বাড়ি বাড়ি ফেরার পরও কড়া বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। সংক্রমণ যাতে না হয়, সেজন্য বাড়িতে খুব ঘনিষ্ঠজন ছাড়া অন্য কাউকে দেখা না করার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বাড়ির ‘বাইপ্যাপ সাপোর্ট’ও ক্রমশ মানিয়ে নিচ্ছেন বুদ্ধদেব, যা স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে। শনিবার বেশ কিছু সময় তাঁকে বাড়ির ‘বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়। তবে তাঁর সমস্ত আর্টেরিয়াল চ্যানেলগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। স্যালাইনের নলও খুলে দেওয়া হয়েছে।  হাত ও পায়ের করা চ্যানেলগুলিও ধীরে ধীরে সব খুলে ফেলা হবে। তবে ফুসফুসকে সক্রিয় রাখতে ফিজিওথেরাপিসহ অন্যান্য যা যা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছিল তা চলছে।  তবে  এখনও রাইল’স টিউবের মাধ্যমেই খাওয়াদাওয়া করানো হচ্ছে।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অন্যতম চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত অতটা খিদে ওঁর নেই। দীর্ঘ সময় ধরে অসুস্থতা, ওষুধপত্র, অ্যান্টিবায়োটিক,  ভেন্টিলেশন— এ সবের জেরে তাঁর মুখে রুচি নেই। ফলে তিনি খুব একটা খাবারও খেতে পারছেন না।  তাই এখন রাইলস টিউবই  তাঁর শরীরকে পুষ্টি জোগাচ্ছে।  তবে সব মিলিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক উন্নতিতে খুশি চিকিৎসকেরা। সব কিছু ঠিক থাকলে সোমবারের মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে বাড়ি ফেরার দিনক্ষণ স্থির হতে পারে।