সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে ৮০ জন অন্তঃসত্ত্বা এইচআইভি আক্রান্ত

লখনউ, ৫ আগস্ট— শুধু অন্তঃসত্ত্বা নয় এমন ভয়ঙ্কর ঘটনায় যে তাদের আসন্ন সন্তানদের জীবনও বিপন্ন হয়ে উঠলো তার দায় এখন কে নেবে এই প্রশ্নেই তোলপাড় উত্তরপ্রদেশ। জানা গেয়েছে, গত ১৬ মাসে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের এক সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের মধ্যে অন্তত ৬০-৮০ জন নাকি এইচআইভি পজিটিভ!

শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন একথা। মিরাটের লালা লাজপত রাই মেডিকেল কলেজের অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি সেন্টারের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। দেখা গেছে প্রসবের জন্য হাসপাতালে আসা ৮১ জন মহিলা এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, এইচআইভি আক্রান্তের শরীর থেকে রক্ত বীর্য এবং যোনিরসের মাধ্যমে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। যৌনতার মাধ্যমে এইআইভি সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি। এছাড়া সংক্রামিত ব্যক্তির রক্ত লেগে থাকা সুচ কারও শরীরে প্রবেশ করানো হলে তিনিও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ইনজেকশন নেওয়া, রক্ত পরীক্ষা করানো এবং ট্যাটু করার সময় এইআইভি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আক্রান্ত মায়ের শরীর থেকে গর্ভাবস্থায়, শিশুর জন্মের সময়, এবং স্তন্যদানের সময় শিশুর শরীরেও এই অসুখ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


এখন প্রশ্ন এখানে চিকিৎসা করাতে আসা মহিলাদের মধ্যে কিভাবে এই সংকরণ ছড়াল। আর এখন তাদের ভবিষ্যৎ কি ?  এঁদের মধ্যে অন্তত ৩৫ জন ইতিমধ্যেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ২০২২-২৩ সালের এআরটি সেন্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, একই হাসপাতালে ভর্তি গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের ৩৩টি নতুন ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু জুলাই পর্যন্তই ১৩টি ঘটনা ধরা পড়েছে। এছাড়া আরও ৩৫ জন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা আগে থেকেই এইচআইভিতে সংক্রামিত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

সংক্রামিত মহিলারা প্রত্যেকে হাসপাতালের এআরটি সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন। তাঁরা সকলেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু যেসব মহিলারা ইতিমধ্যেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন সেই সব নবজাতকরা কেমন রয়েছে? এর উত্তরে এআরটি সেন্টারের নোডাল অফিসার জানিয়েছেন, শিশুগুলির বয়স দেড় মাস হওয়ার পর তাদের প্রত্যেকের এইচআইভি পরীক্ষা করা হবে।

ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মিরাটের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অখিলেশ মোহন প্রসাদ জানিয়েছেন, হাসপাতালে অন্তত ৬০ জন মহিলার শরীরে এইচআইভি সংক্রমণের খবর সামনে এসেছে। তবে তাঁরা এবং নবজাতকরা সকলেই সুস্থ রয়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, আক্রান্ত মহিলাদের তথ্য জানার জন্য, এবং কীভাবে তাঁরা সংক্রামিত হলেন সে বিষয়ে বিশদ তথ্য পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই একটি মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে।