সাইবার অপরাধের আশংকা রয়েছে ভারতের ১২ হাজার সরকারি ওয়েবসাইটে, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

দিল্লি, ১৪ এপ্রিল – সাইবার অপরাধের আশংকা রয়েছে ভারতের ১২ হাজার সরকারি ওয়েবসাইটে, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই ঘটনা আঁচ করে আগাম সাইবার সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। হ্যাকারদের লক্ষ্যে ভারতের ১২ হাজার সরকারি ওয়েবসাইট রয়েছে এই খবর জানতে পেরে চিন্তিত কেন্দ্র । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, ইন্দোনেশিয়ার একটি হ্যাকার গ্রুপ রয়েছে এই সাইবার অপরাধের পিছনে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আক্রমণ করতে পারে এই হ্যাকার দল। তাই সরকারি আধিকারিকদের এখন থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।  

গত বছর ডিসেম্বরে আইসিএমআর অর্থাত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ- এর ওয়েবসাইটে হানা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল হ্যাকাররা। একদিনে ৬ বার আইসিএমআর-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেছিল হ্যাকাররা। যদিও সফল হয়নি। তার আগে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ওয়েবসাইটে র‍্যানসমওয়্যার হামলা হয় । গোটা ইনস্টিটিউটের অনলাইন সিস্টেম বিকল করে দিয়েছিল এই সাইবার অপরাধ । ২০২২ সালে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইটে ১৯টি র‍্যানসমওয়্যার হামলার খবর মিলেছিল।

এবারের এই হামলা আরও মারাত্মক বলে জানিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কীভাবে ইন্দোনেশিয়ার এই গ্রুপটি হামলার ছক কষছে তারও আভাস দেওয়া হয়েছে। তারা ‘ডেনিয়েল অফ সার্ভিস’ লঞ্চ করার পরিকল্পনা করছে। যার ফলে অনেকগুলি কম্পিউটার বা ডিভাইস থেকে একসাথে বিপুল পরিমান তথ্য পাঠাবে যাতে গোটা ব্যবস্থা স্তব্ধ হয়ে যায়।


সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হ্যাকারদের গ্রুপটি একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে, যেসব সরকারি ওয়েবসাইটে তারা হামলা করার ছক কষেছে। এই জন্য সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যেকোনও অজানা ইমেল বা লিঙ্ক যাতে কেউ ক্লিক না করেন। সমস্ত সফ্টওয়্যার আপ-টু-ডেট রাখতেও বলা হয়েছে।

এছাড়াও সম্প্রতি ওয়েবসাইট সুরক্ষিত করার কেন্দ্র সরকারের দেওয়া নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সমস্ত  সরকারি কর্মচারীদের। কীভাবে সাইবার আক্রমণ প্রতিহত করা যায় তারও খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের রিপোর্ট জানাচ্ছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং পরিষেবা ক্ষেত্রগুলি অচল করে দেওয়াই এই সাইবার হানার উদ্দেশ্য। ভারতের ভৌগোলিক এলাকার পাশাপাশি ভার্চুয়াল পরিসরেও গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে হানা দিচ্ছে পাকিস্তানি এবং চিনা হ্যাকাররা। স্বাস্থ্য পরিষেবা, পরিকাঠামো, ব্যাঙ্কিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র তাদের নিশানা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তেমনই উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এ ধরনের হামলার মূল লক্ষ্য দু’টি— প্রথমত, সফ্‌টঅয়্যার ভাইরাস ব্যবহার করে প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া। দ্বিতীয়ত, নানা ভুল তথ্য ঢুকিয়ে দিয়ে পরিষেবা ক্ষেত্রের ওয়েবসাইটগুলিকে বিকল করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, অতিমারি পরিস্থিতিতেও দেশের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাকে ‘ডিজিটাল হস্টেজ’ বানানোর লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছিল পাক এবং চিনা হ্যাকারেরা।