জাপানে ভূমিকম্পের জেরে মৃতের সংখ্যা ৩০, উঠে গেল সুনামি সতর্কতা

টোকিও, ২ জানুয়ারি: জাপানের তীব্র ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে তুলে নেওয়া হয়েছে সুনামি সতর্কতা। চলছে উদ্ধার কাজ। পাশাপাশি, দেশে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যস্ত প্রশাসন।

প্রসঙ্গত নববর্ষের প্রথম দিনে জাপানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রথমে কোনও হতাহতের খবর না পেলেও পরে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই ভূমিকম্পের ফলে এখানকার বহু বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। আগুন ধরে যায়, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ব্যাহত হয় মোবাইল পরিষেবা। দেশের একাধিক জায়গায় বুলেট ট্রেন পরিষেবা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ রাখা হয়। বিভিন্ন জায়গায় এই ট্রেন পরিষেবা ধীর গতিতে চলতে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ববিভাগ জানিয়েছে, গতকাল আঞ্চলিক সময় বিকাল চারটে ১০ মিনিটে ঈশিকাওয়ার নোটো উপদ্বীপে ভূমিকম্পের প্রবল তাণ্ডব লক্ষ্য করা যায়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৭.৬ বলে দাবি করা হয়। কম্পনের উৎসস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। পরবর্তীতে অজস্র আফটার শক লক্ষ্য করা যায়। গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৫ বার কম্পন অনুভূত হয়েছে। জাপানের পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি হয়। ফলে জাপানের প্রশাসন সুনামির সম্ভাব্য উপকূলবর্তী এলাকা খালি করার নির্দেশ দেয়। সুনামির আশঙ্কা তৈরি হয় রাশিয়ার পূর্ব উপকূলেও। সেখানেও জারি হয় সুনামি সতর্কতা। তবে এখন এই দুই দেশে সুনামি সতর্কতা তুলে নেওয়া হলেও জাপানের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ অব্যাহত। রীতিমতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধার কাজ।


এদিকে, ভূমিকম্পের পর এদিন সন্ধ্যায় মধ্য জাপানের ওয়াজিমা শহরে প্রবল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের লেলিহান শিখায় ভস্মীভূত হয়ে যায় প্রায় শতাধিক দোকান ও বাড়িঘর। ঈশিকাওয়ার শিখা পরমাণু বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং পোড়া গন্ধ পাওয়া গিয়েছে। এখানকার অপারেটর দাবি করেছে, ভূমিকম্পের ফলে একটি ট্রান্সফরমার অকেজো হয়ে গিয়েছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা থাকায় এই বিদ্যুৎ সংস্থার কার্যকারিতা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে ভারতীয় দূতাবাস জাপানে প্রবাসী ভারতীয়দের সাহায্যে একটি কন্ট্রোল রুম চালু করে। চালু করা হয় একাধিক হেল্প লাইন নাম্বার। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষের জীবন রক্ষায় তৎপর রয়েছে প্রশাসন। আঞ্চলিক সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।