তিস্তা নিয়ে কথা হবে কি ?

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (File Photo: IANS)

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন কলকাতায় আসা নিয়ে কৌতুহল তুঙ্গে। আগামী ২২ নভেম্বর ইডেন উদ্যানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় ক্রিকেট টেস্ট উপলক্ষে তাঁর আগমন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও হাসিনা যৌথভাবে খেলা শুরুর ঘণ্টা বাজাবেন। খেলা হবে গােলাপী বলে, যা প্রথম।

ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বাের্ডের প্রেসিডেন্ট, প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি এই খেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরােধ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেই তিনি এখানে আসছেন। ঢাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, সৌরভের আমন্ত্রণেই তিনি যাচ্ছেন। অপরদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি হাসিনাকে টেস্ট ম্যাচ উপলক্ষে কলকাতায় আসার জন্য সরকারিভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ওইদিন তাঁর অন্য কোনও কাজ থাকাতে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এই ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে কলকাতায় আসছেন সচিন তেন্ডুলকর সহ এক ঝাঁক প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক এবং ক্রিকেটার।

ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে হাসিনা ও মমতার মধ্যে আলােচনা হবে না- তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। দীর্ঘদিন পর দু’জনে আবার মিলিত হচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই ঢাকায় সাংবাদিকরা হাসিনার কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে এই সুযােগে কোনও কথা হবে কিনা? হাসিনা বলেছেন, তিনি সৌরভের আমন্ত্রণে কলকাতা যাচ্ছেন, অন্য কোনও বিষয় তার মধ্যে নেই।


দু’বছর আগে দিল্লি সফরকালে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী যখন দিল্লি এসেছিলেন তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে উপস্থিত ছিলেন। হাসিনা ও মমতার মধ্যে নানা বিষয়ে আলােচনাকালে তখন তিস্তা প্রসঙ্গও উঠেছিল। তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে কিছু অসুবিধার কথা মমতা হাসিনাকে জানিয়েছিলেন। সে অসুবিধে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থকেন্দ্রিক। বাংলাদেশে শুখা মরশুমে জলের সঙ্কট সম্বন্ধে মুখ্যমন্ত্রী অবহিত। কিন্তু শুখা মরশুমে তিস্তার জলপ্রবাহ এমনভাবে হ্রাস পায় যে তার থেকে কিছু জল বাংলাদেশের জন্য ছাড়লে উত্তরবঙ্গে চাষের এবং পানীয় জলের সঙ্কট সৃষ্টি হবে। তাই তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে উত্তরবঙ্গের দুটি নদীর জল বাংলাদেশকে দেওয়ার প্রস্তাব হাসিনাকে দেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

তিনি ঢাকায় পৌঁছে বলেন, তিস্তার জল ছাড়া অন্য কোনও নদীর জলের কথা তিনি ভাবছেন না। তারপর কিছুটা ইস্যুটা জিইয়ে রেখে বাংলাদেশ সরকার দিল্লির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, তিস্তার জলের দাবি বাংলাদেশ সরকার ছাড়বে না। আবার ভারত সরকারও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিনা সম্মতিতে তিস্তা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝােতায় আসার কথা ভাবছে না। সুতরাং তিস্তার জলবণ্টনের একটি সুরাহা এখনও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

এই পরিস্থিতি চলাকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় আসছেন এবং মমতার সঙ্গে তাঁর দেখা হবে। তখন কি তিস্তা নিয়ে হাসিনা মমতাকে কিছু বলবেন? জল্পনা তাই নিয়েই।