আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দেশের উন্নয়নের জন্য, নাগরিকদের সাক্ষর হওয়া প্রয়োজন। সাক্ষরতা অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি কারণ। পড়তে এবং লিখতে সক্ষম ব্যক্তিকে সাক্ষর বলা হয়। যাঁর ‘ক, খ, গ’ জ্ঞান আছে, ভাষার প্রতি সম্মান আছে এবং যিনি সঠিক ও বেঠিকের পার্থক্য বোঝেন, তিনিই সাক্ষর।
‘সাক্ষরতা’ শব্দটি ‘সাক্ষর’ থেকে এসেছে, যার অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যিনি বর্ণমালা বুঝতে সক্ষম অর্থাৎ পড়তে এবং লিখতে সক্ষম। শিশু থেকে বয়স্কদের শিক্ষার প্রসারের জন্য সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়। সাক্ষরতার গুরুত্ব ও উপকারিতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এবং শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতি বছর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়।

সাক্ষরতার মানে অক্ষর–পরিচিতি, লেখা ও পড়ার ক্ষমতা। সোজা কথায়, ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞানের ধারণা থাকাই সাক্ষরতা। তবে দিন দিন এ সংজ্ঞায় সংযোজন হচ্ছে নতুন শব্দ। ফলে বাড়ছে এর পরিধি। আজও পৃথিবীর প্রায় ৭৭৫ মিলিয়ন মানুষের এই ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞানের অভাব রয়েছে। ফলে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি পাঁচজনে একজনের রয়েছে শিক্ষার অভাব। এর মধ্যে একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে নারী। গোটা বিশ্বের প্রায় ৬০ দশমিক ৭ মিলিয়ন শিশু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। করোনার পর এই অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। করোনা মহামারির পর ২৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে ফেরেনি। ভারতের চিত্রও এর চেয়ে আলাদা কিছু নয়।

ভারত সরকার সাক্ষরতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বশিক্ষা অভিযান চালায়, যার মাধ্যমে সমস্ত ভারতীয়কে শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু নানা কারণে স্কুল ছুটদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ১৯৬৬ সালের ৭ নভেম্বর এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইউনেস্কো এই দিনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধির জন্য বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হবে। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৬৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়, তারপর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি পালিত হতে শুরু করে।


বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৮৪ শতাংশ শিক্ষিত। ভারতে মোট সাক্ষরতার হার ৭৪.৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৮২.৩৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৬৫.৭৯ শতাংশ নারী সাক্ষর। কেরালা হল সর্বোচ্চ সাক্ষরতার রাজ্য। একই সঙ্গে বিহারে সবচেয়ে কম। ১৯৬৭ সাল থেকে , বিশ্বকে করুণা, শান্তি এবং স্থায়ী পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সাক্ষরতার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা হয়ে আসছে। সাক্ষরতা একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত।‌ যা মানুষকে সমাজে সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করার, তাঁদের স্বাধীনতা উপভোগ করার এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে বোঝাপড়া প্রচারের ক্ষমতা তৈরি করে।

২০২৫ সালে , ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য বিশ্বব্যাপী সাক্ষরতার হার প্রায় ৮৭.০১% এ দাঁড়িয়েছে।যা স্থিতিশীল অগ্রগতির প্রতিফলন। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে এই বছরের প্রতিপাদ্য, “সম্পূর্ণ বিশ্বের জন্য সাক্ষরতার প্রচার: এবং শান্তিপূর্ণ সমাজের ভিত্তি তৈরি করা”।