শিল্পীর নবজন্ম

ফাইল চিত্র

রম্যাঁ রলাঁ

পূর্ব প্রকাশিতর পর

বারবুস, দ্যুআমেল ও আমি প্রথম ‘বুদ্ধিজীবীদের আন্তর্জাতিক কংগ্রেস’ (Congress of International of Intellectuals প্রকাশ করিলাম (২৪শে জানুয়ারী ১৯২০)।


৬। ক্লেরাবোল। ভালমন্ট ক্লিনিকে রুগ্নাবস্থায় রোগের সবচেয়ে সংকাটপন্ন সময়ে ইহার শেষ ভাগ (বিশেষত ইন্টার ফ্রাইডের দীপসজ্জার কথা) লিখি। ১৯২০ সালের শেষদিকে বইখানি পারিতে বসিয়া শেষ করি এবং মে মাসের প্রারম্ভে ‘সবার বিরুদ্ধে একা’ এই আসল নাম দিয়া প্রকাশকের নিকট পাণ্ডুলিপি’ পাঠাই। ১৯২০ সালের অক্টোবর মাসে বইখানি বাহির হয়।

৭। ১৯২০ সালের আগস্ট মাসে সোয়েনেকে দিলীপকুমার রায় নামক জনৈক ভারতীয় বন্ধুর মুখে গান্ধী ও তাহার ব্যক্তিত্বের কথা প্রথম শুনি। কিন্তু ১৯২১ সালের এপ্রিল মাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ও পরে ১৯২২ সালে এপ্রিল মাসে কালিদাস নাগের পারি আগমন পর্যন্ত আমি তাহার ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হই নাই। ইতিমধ্যে মাদ্রাজের প্রকাশক গনেশন্ গান্ধীর কতকগুলি ইংরেজী প্রবন্ধের (ইয়ং ইণ্ডিয়া) প্রুফ আমার নিকট পাঠাইয়া দেন ও ঐগুলির জন্য আমাকে একটি ভূমিকা লিখিয়া দিতে আনুরোধ করেন। গান্ধীর রাজনৈতিক মতবাদের সঙ্গে যথেষ্ট মিল না থাকায় আমি আস্বীকার করিলাম; গণেশনকে লিখিলাম, ‘‘গান্ধীর মধ্যে আমি একজন ‘আদর্শবাদী-জাতীয়তাবাদী’কে দেখিতেছি’’—‘‘তিনি-ভাবাদর্শী জাতীয়তাবাদের মহত্তম পবিত্রতম প্রতীক।’’

কিন্তু তাহার বিরুদ্ধে আমার আন্তর্জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গী আমি ছাড়িতে চাহিলাম না। আমি জানাইলাম, চিন্তা ও কর্মের এই বিরাট ব্যবস্থা সম্পর্কে হটাৎ কোনো অভিমত প্রকাশ করিবার মানুষ আমি নই; যতদিন পর্যন্ত গভীরভাবে ও সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ইহা অধ্যয়ন করিতে না পারিতেছি ততদিন আমি অপেক্ষা করিব।

অপেক্রা আমি করিলাম, অধ্যয়ন যখন আমার সমাপ্ত হইল তখন আমি মুগ্ধ। ১৯২২-২৩ সালের শীতকালের সমস্ত সন্ধ্যাগুলি আমি আমার ভগ্নীর সহিত গান্ধীর প্রবন্ধগুলি পড়িলাম। ১৯২৩ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে ‘গান্ধী সম্পর্কে রচনা’ লিখিলাম; তিনটি প্রবন্ধের আকারে উহা প্রকাশিত হইল ‘ইউরোপ’ পত্রিকার ১৯২৩ সালের মার্চ, এপ্রিল ও মে সংখ্যায় (পত্রিকাখানি সবেমাত্র শুরু হইতেছে)। পরে ঐগুলি পুস্তাকাকারে প্রকাশিত হইল ১৯২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথমভাগে। ইহার পর আমারই উদ্যোগে ‘Young India’ নামক গান্ধীর প্রবন্ধগুলির একটি ফরাসী আনুবাদ বাহির হইল; আমি উহার ভূমিকা লিখিলাম (১৯২৫ সালের জুলাই মাস)।

৮। এই সময়কার নানা রচনাঃ
(ক) নিম্নোক্ত তিনখানি বই-এর ভূমিকাঃ Histoire de Douze Heurses, লেখক পি. জে. বোনজিয়া, আগস্ট, ১৯২১ (রাইডার সম্পাদিত);
Sous le P[ressoir লেখক এইচ্. ন্যাডেল (Soe Mutuelle d’ Edition); Le Petit Jean. লেখক ফ্রেডেরিক ভানে এডেন, ১৯২১ (সম্পাদক রাইডার);
(খ) প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে মিলন স্থাপনের উদ্দেশ্যে ‘জাপানের তরুণদের প্রতি বাণী’, ১২ই আগস্ট, ১৯২১;
(গ) জুর্নাল দ্যু প্যেপল পত্রিকায় লিখিত কতকগুলি চিঠিঃ ফেবারের বহিষ্কার সম্পর্কে এবং প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে সমস্ত বিপ্লবীদলগুলির মিলনের উদ্দেশ্যে (৮ই জুলাই, ১৯২২);

(ক্রমশ)