শিল্পীর নবজন্ম

ফাইল চিত্র

রম্যাঁ রলাঁ

পূর্ব প্রকাশিতর পর

এ বিদ্রোহ তাহাদেরই যাহারা ‘সমুদ্রের উপর দিয়া এবং সমুদ্রের চেয়েও বিশাল মানুষের নির্বুদ্ধিতার উপর দিয়া ইউরোপ নামক কারাগার হইতে আমেরিকা নামক কারাগারের সহিত হাত মিলাইয়াছে।’’


ইহারই অল্পকাল পরে আমি ই. ডি. মরেলের পক্ষ সমর্থন করি। তিনি তখন ইংলণ্ডে অত্যন্ত কদর্য অবস্থার মধ্যে কারারুদ্ধ। সুইজারল্যাণ্ডে আমার নিকট তাহার একখানি রাজনৈতিক পুস্তিকা পাঠাইতে চাইয়াছিলেন, ইহাই ছিল তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ। অভিযোগটি শুধু হাস্যাস্পদই নহে, একেবারে মিথ্যা। ‘সৈনিক সর্বহারাদের নামে হত্যালিপ্সু পুরাতন জগতকে বারবুস্ একটি প্রবন্ধে অদ্ভুত নৈপুন্যের সহিত আক্রমণ করিয়াছিলেন। তারিফ করিয়া বারবুসকে পত্র দিলাম। এইখানেই ক্ষান্ত হইলাম না; সেনাবাহিনীতে যে সকল তরুণ ফরাসী বুদ্ধিজীবী ছিল তাহাদের ক্ষোভ ও বেদনার আর্তনাদের জবাবও দিলাম।

সীমান্তের অপর পারে যাহারা ছিলেন তাহাদের বিদ্রোহ ও বেদনাকে আমি প্রকাশিত করিতে লাগিলাম। ইহার মধ্যে ছিল লাৎসকোর বিকারের আর্তনাদ, স্তেফান ৎসাইগের বাইবেলের মত বিষণ্ণতা, ফাদার নিকোলাইয়ের যুদ্ধের অপূর্ব বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। উৎপীড়িত ও কারারুদ্ধ এই জার্মান পণ্ডিতকে আমি একজন ‘মহান ইউরোপীয়ান’ বলিয়া অভিনন্দন জানাইলাম। ইহাও জানাইলাম আমার দিক হইতে আমি কিছুতেই নিজেকে ইউরোপ ও ইউরোপীয় ঐক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ করিয়া রাখিতে পারি না। আমার কল্পনার ‘বিশ্বদেশের’ মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়াও রহিয়াছে, রহিয়াছে সমগ্র মানবসমাজ।

১৯১৮ সালের ১৫ই মার্চ ‘ফর দি ইনটারন্যাশনাল অব মাইণ্ড’ নামক একটি প্রবন্ধে আমি আমার ‘ইউরোপের বাহিরে বিশ্বমানবতা’ প্রবন্ধের পুনরায় অবতারণা করি। এই প্রবন্ধে ইহাই আমি বিশেষভাবে বলিতে চাহিয়াছিলাম যে, আমি মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী বুদ্ধিজীবীর জন্য সংগ্রাম করিতেছি না: এ সংগ্রাম জনসাধারণের জন্য, আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির জন্য— যাহা কেবলমাত্র সুবিধাভোগী শ্রেণীর জন্য নহে।’

১৯১৬ সালের অক্টোবর মাস হইতে দ্যম্যাঁ পত্রিকাখানির উপর সমাজসংগ্রামের ছাপ পড়ে। গিলবো-র ইচ্ছা ছিল তাহার জেনেভার বন্ধু বোলশেভিক নেতাদের সহিত ইউরোপের উপর দিয়া বিপ্লবের মশাল বহিয়া সে পেট্রোগ্রাডে যায়। তাহা না গিয়া সে ফরাসীসীমান্তের অপর পারে যাহারা ছিলেন তাহাদের বিদ্রোহ ও বেদনাকে আমি প্রকাশিত করিতে লাগিলাম। ইহার মধ্যে ছিল লাৎসকোর বিকারের আর্তনাদ, স্তেফান ৎসাইগের বাইবেলের মত বিষণ্ণতা, ফাদার নিকোলাইয়ের যুদ্ধের অপূর্ব বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। উৎপীড়িত ও কারারুদ্ধ এই জার্মান পণ্ডিতকে আমি একজন ‘মহান ইউরোপীয়ান’ বলিয়া অভিনন্দন জানাইলাম। ইহাও জানাইলাম আমার দিক হইতে আমি কিছুতেই নিজেকে ইউরোপ ও ইউরোপীয় ঐক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ করিয়া রাখিতে পারি না। আমার কল্পনার ‘বিশ্বদেশের’ মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়াও রহিয়াছে, রহিয়াছে সমগ্র মানবসমাজ।
১৯১৮ সালের ১৫ই মার্চ ‘ফর দি ইনটারন্যাশনাল অব মাইণ্ড’ নামক একটি প্রবন্ধে আমি আমার ‘ইউরোপের বাহিরে বিশ্বমানবতা’ প্রবন্ধের পুনরায় অবতারণা করি। এই প্রবন্ধে ইহাই আমি বিশেষভাবে বলিতে চাহিয়াছিলাম যে, আমি মুষ্টিমেয় সুবিধাভোগী বুদ্ধিজীবীর জন্য সংগ্রাম করিতেছি না: এ সংগ্রাম জনসাধারণের জন্য, আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির জন্য— যাহা কেবলমাত্র সুবিধাভোগী শ্রেণীর জন্য নহে।’

১৯১৬ সালের অক্টোবর মাস হইতে দ্যম্যাঁ পত্রিকাখানির উপর সমাজসংগ্রামের ছাপ পড়ে। গিলবো-র ইচ্ছা ছিল তাহার জেনেভার বন্ধু বোলশেভিক নেতাদের সহিত ইউরোপের উপর দিয়া বিপ্লবের মশাল বহিয়া সে পেট্রোগ্রাডে যায়।

(ক্রমশ)