শিল্পীর নবজন্ম

ফাইল চিত্র

রম্যাঁ রলাঁ

পূর্ব প্রকাশিতর পর

বিভ্রান্তির অবসান আগস্ট মাসের প্রথম দিকে আমাদের মধ্যে একজনও ঘটাইতে সক্ষম হয় নাই।
আমরা কোনোটিকেই ত্যাগ করিতে চাহিলাম না। দু’য়ের মধ্যে আপোশ চলিতে পারে এর দুরাশায় অন্ধ হইয়া আমরা অন্ধকারে পথ হাতড়াইতে লাগিলাম। আমরা, এই ‘আমরা’ বলিতে আমি কেবল বুদ্ধিজীবীদের কথা বলিতেছি না (বুদ্ধিজীবীরা তখন মক্ষিকাপালের মত ঘুরিতেছিল)। কর্মজীবী বহু লোকও ইহার মধ্যে ছিলেন; ইহাদের অনেককে আমি জানি। রাষ্ট্রের প্রধান ভূমিকা ইহাদের কেহ কেহ গ্রহণ করিয়াছিলেন। ইহাদের মধ্যে ছিলেন জোরে নিজে। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ইনি স্থির করিতে পারেন নাই, রোমক আদর্শে সমগ্র জাতির অস্ত্রসজ্জা অথবা জাগ্রত জনগণকর্তৃক আত্মভাগ্য নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ, ইহার কোনটি শ্রেয়।


কিন্তু, তখন গহ্বরমুখ উন্মুক্ত হইয়া গিয়াছে।… পথ বাছিয়া লইতে হইবে। কিন্তু সময় আর নাই। আমাদের পক্ষ হইতে বাছিয়া লওয়া তখন শেষ হইয়া গিয়াছে। সেই দানবীয় অতীতকেই আমরা গ্রহণ করিয়াছি— যে অতীত আমাদের ভবিষ্যতকে লিখিতে শুরু করিয়াছে। তখন আমি সুইজারল্যাণ্ডে এক দীর্ঘ ক্লান্তির স্বপ্ন হইতে জাগিয়া উঠিতেছিলাম। সেই নয়নমনোহর গ্রীষ্মঋতুর জুন-জুলাই মাসের দিনগুলিকে অন্ধকার করিয়া আকাশে যে মেঘ জমিতেছিল, প্রেমের বাহুপাশে দৃষ্টি ত’ আর আসে নাই! ইউরোপে তখন হত্যাযজ্ঞের আয়োজন সম্পূর্ণ হইয়া আসিতেছিল তখনকার সে দিনগুলির সে কি চোখ-ধাঁধানো রূপ!)। আমার চোখের উপর হইতে দয়িতের চম্পক অঙ্গুলিগুলি যখন সরিয়া গেল তখন পৃথিবী অন্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়া গিয়াছে ও যুদ্ধ ঘোষিত হইয়াছে।

(ক্রমশ)