রম্যাঁ রলাঁ
পূর্ব প্রকাশিতর পর
ব্যক্তিগত শক্তির আনুসঙ্গিক প্রয়োগ গণসংগ্রামকে ব্যহত করে না, শক্তিশালী করে। যে বাহিনীর রণাঙ্গন সমস্ত পৃথিবী ব্যাপিয়া, সাধারণভাবে সমস্ত রণাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করিতে গিয়া তাহাকে স্বীকার করিতে হইবে যে, প্রত্যেক বিভিন্ন ফ্রন্টেরই কর্মের স্বাধীনতা রহিয়াছে।’’
যদিও অস্থায়ী আমস্টার্ডম ইস্তাহার (যাহা রচনায় আমার কোনো হাত ছিল না) বিবিকের নির্দেশে যুদ্ধবিরোধিতার উপর আমি যতটা দাবী করিয়াছিলাম ততটা গুরুত্ব আরোপ করেন নাই। (যদিও আমি শ্রদ্ধার সহিত ইহার উল্লেখ করিয়াছিলাম) আমি দ্বিগুণভাবে চেষ্টা করিতে লাগিলাম (১৯৩২ সালের ১০ই ডিসেম্বর, বারবুসের নিকট লিখিত পত্র) এবং ১৯৩২ সালের শেষভাগে ইস্তাহার প্রণয়ন হইবার সময় যে আলোচনা হয় তাহাতে শ্রমিক বিপ্লব ও বিবেকের নির্দেশে যুদ্ধবিরোধিতা এই দু’এর সহযোগিতাকে আমি নীতি হিসাবে গ্রহণ করাইতে সক্ষম হই।
যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাইবার জন্য গঠিত International Bureau of World Committee-র পারি-তে যে দ্বিতীয় অধিবেশন হয় (১৯২৩ সালের ২১-২৩ ডিসেম্বর) তাহাতে “Declaration on the Participation of thye Groups for Individual Action for Amsterdum Movement” প্রকাশিত হয়। ফরাসী, জার্মান ও রুশ কমিউনিস্ট পার্টি দায়িত্ববলে সভ্যদের লইয়া গঠিত (বারবুস, কাচিন, ভিলি, মুনৎসেনবের্গ, শুভের্নিক এইচ. স্ট্যাসোভা প্রভৃতি) এই ব্যুরো ‘‘আবার স্পষ্টভাষায় ঘোষণা করিতেছে সমস্ত দলের উপরে ও বাহিরে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাইতে সংকল্পবদ্ধ সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ও ব্যক্তিকে সম্মিলিত করাই ইহার লক্ষ্য। ইস্তাহারের স্থানবিশেষ লইয়া যে অমূলক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হইয়াছে তৎসম্পর্কে ইহা ঘোষণা করিতেছে যে, বিবেকের নির্দেশে যুদ্ধবিরোধীদের মত ব্যক্তিগত সংগ্রামে বিশ্বাসী দলেরও স্থান আমাদের মধ্যে আছে, যদি তাহারা বিশ্বসম্মেলন হইতে যে প্রতিষ্ঠানগুলির সৃষ্টি হইয়াছে তাহাদের সহিত সম্পূর্ণ বিনাশর্তে সহযোগিতা করিতে সম্মত হন।’’
বিবেকবাদী, অহিংসবাদী League of Fighter for Peace-এর সভ্যদের মধ্যে (এই সময় আমি ছিলাম ইহার সভাপতি) আমি পূর্বোক্ত নীতি অনুযায়ী আন্দোলন চালাইতে লাগিলাম। (International Bureau of the Amsterdum Committee কর্তৃক নির্দিষ্ট সহযোগিতা সাধনোদ্দেশ্যে আবেদন ও পত্রাবলী দ্রষ্টব্য): ১০ই জুন, ১৯৩২, ‘‘শিান্তির জন্য সংগ্রামকারিগণের নিকট আবেদন; ১২ই জুলাই, ১৯৩২, ‘‘ভিক্টর মেরিকের নিকট লিখিত পত্র’’; ২১শে জুলাই ১৯৩২, International Anti-militarist Bureau-র সেক্রেটারী আলবের দ্য জঁ-এর প্রেরিত প্রতিবাদ। আমস্টার্ডম কংগ্রেস ভাঙ্গিয়া দিবার জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি চেষ্টা করিয়াছিল।
১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৩২, International League of Women for Peace and Liberty-র সেক্রেটারী কামীয় দ্রেভেকে লিখি চিঠি;’’ ১৫ই জানুয়ারী, ১৯৩৩, শ্রমিক জনগণের সহিত বিবেকবাদী ও নীরব প্রতিরোধীদের মিলিতভাবে সংগ্রাম চালাইবার জন্য ‘‘রেনে শিকেলের’’ নিকট পত্র; সর্বোপরি ‘International League of the Fighters for Peace-এর National Easter Congress-এর নিকট আবেদন (১৫ই মার্চ, ১৯৩৩) এবং এই আবেদনের সহিত মন্তব্য জুড়িয়া কংগ্রেসের সেক্রেটারী এ. বোসের নিকট লিখিত পত্র (১৮ই মার্চ, ১৯৩৩), জর্জ পিয়শকে লিখিত চিঠি (১৩ই এপ্রিল, ১৯৩৩); ১২ই জুলাই ১৯৩৩, লণ্ডনের ‘No More War’ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক রেজিন্যাল্ডস্ এ. রেনল্ডস্-এর নিকট লিখিত পত্র, ইত্যাদি।
(ক্রমশ)