প্রবীর মজুমদার
২৫ বছর আগের এক নভেম্বর মাসের একটা দিন। প্রতিদিনের মতোই সেদিনও হাজার হাজার মানুষ আগ্রায় হাজির তাজমহল দেখার অভিলাষে। ৮ নভেম্বর, ২০০০ আগ্রা শহরের কাচপুরার মানুষজনের সামনে তাজমহলকে বেমালুম গায়েব করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিখ্যাত জাদুকর জুনিয়র পিসি সরকার তাঁর জাদুমন্ত্রের জোরে। সেদিন জাদুকরের আশ্চর্য কারিশমা দেখে সবাই পরম বিস্মিত হয়েছিলেন। আর এখন? সেদিনের সেই মায়াবী ঘটনার সিকি শতক পরে, তাজমহল-সহ দেশের রাজধানী শহর দিল্লির প্রায় সমস্ত বিখ্যাত সৌধগুলো প্রায় প্রতিদিনই বিলকুল ‘ভ্যানিশ’ হয়ে যাচ্ছে স্মগ বা ধোঁয়াশার কারণে। স্মগের দাপটে দিল্লি-সহ উত্তরভারতের একাধিক জনপদ মায় পাকিস্তানের লাহোর শহরও এখন ধোঁয়াশায় ঢাকা পড়েছে। প্রবল বায়ুদূষণের কারণে দিল্লি এখন পৃথিবীর দূষিততম মহানগরীর শিরোপা মাথায় নিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে।
দিল্লি বা উত্তরভারতের মানুষজনের কাছে এই সমস্যা মোটেই নতুন নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে শীতকালে ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে জাতীয় রাজধানী শহর। এই নিয়ে বিস্তর হইচই, রাজনৈতিক তর্কাতর্কির পর্ব চলছে সমানতালে। তবে সমস্যার কোনও ইতিবাচক সমাধানসূত্র এখনও মেলেনি। এখনও দেশে শীতের দাপট তেমন জোরালো হয়ে ওঠেনি, আর তাতেই এমন দুঃসহ অবস্থা।
কুয়াশার হালকা জলীয় আবরণী যখন ধোঁয়ার সঙ্গে বা ধূলিকণার সঙ্গে যুক্ত হয় তখনই তৈরি হয় ধোঁয়াশার ঘন এক আস্তরণ।হেমন্তের হালকা ঠান্ডায় গ্রামবাংলার প্রভাতী মাঠ-ময়দান, জলাশয় জুড়ে কুয়াশার যে হালকা আবরণী আমরা লক্ষ করি, তার চেয়ে দিল্লির ধোঁয়াশা একদম আলাদা। আবহবিজ্ঞানীদের মতে কুয়াশা হল মাটির কাছাকাছি সৃষ্টি হওয়া মেঘ। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে জলীয় বাষ্প যা বায়ুমণ্ডলের এক অন্যতম উপাদান। কোনও শীতল তলের সংস্পর্শে এলে সেই জলীয় বাষ্প দ্রুত বাষ্পীয় দশা ত্যাগ করে ভাসমান জলকণায় পরিণত হয়। শীতকালেই এমনটা ঘটে, কারণ এই সময় ভূপৃষ্ঠের ওপর তির্যক সৌরকিরণ পড়ার ফলে তা অপেক্ষাকৃতভাবে কম আতপ্ত হয়। আবার দ্রুত সেই তাপ ছেড়ে দেওয়ার ফলে অনেকটাই শীতল হয়ে পড়ে। কয়েক কুঁচি বরফ দেওয়া ঠান্ডা গ্লাসের গায়ে যেমন জলবিন্দু দেখা যায় এ-ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেইরকম। আপাত নিরীহ এই ভাসমান জলবিন্দু চাদরে যখন বিপুলসংখ্যক ধূলিকণা ও অন্যান্য দূষকের অনুপ্রবেশ ঘটে তখনই তা পরিণত হয় ঘন ধোঁয়াশায় যা অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে দৃষ্টিস্বচ্ছতার মাত্রা ভীষণভাবে কমে যায়। নাকের ডগায় থাকা তাজমহলও তখন রীতিমত অদৃশ্য হয়ে যায়। যমুনাপাড়ের দিল্লি এখন এমনই এক সমস্যার সম্মুখীন।
তবে দিল্লির এই মারণ পরিস্থিতির বিষয়টি এখন আর শুধুমাত্র সেই অঞ্চলের সমস্যা নেই, এই সমস্যা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক পরিবেশ সমস্যার চেহারা নিয়েছে। আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোও এই বিষয়ে তাঁদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কেননা এই অবস্থার সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তার প্রশ্নটি জড়িয়ে আছে। লাগাতার কয়েক দিন ধরে দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি সূচক মান গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই মান মানুষের স্বাভাবিক সহনমাত্রার চেয়ে অনেক অনেক বেশি। অনিবার্যভাবে যে প্রশ্নগুলো এখানে সামনে উঠে আসছে, তা হল এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি বারবার দিল্লিকে গ্রাস করছে কেন? দিল্লির মতো একটি জনবহুল মহানগরীর বায়বীয় স্বাস্থ্যের এমন করুণ পরিণতির কারণগুলো নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে।
দিল্লির আশেপাশের এলাকায় ব্যাপকভাবে শস্যের অবশিষ্ট অংশ বা নাড়া পোড়ানোকে এমন অবস্থার জন্য মুখ্যত দায়ী বলে মনে করেন আবহবিদ্ তথা পরিবেশবিজ্ঞানীরা। ফসল কাটার পর রাজধানী-সংলগ্ন পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা নতুন ফসল বোনার আগে পুরনো ফসলের অবশিষ্টাংশ মাঠেই পুড়িয়ে দেন বহুদিন ধরে। বাতাসে এই ধোঁয়া মিশে যাওয়ার ফলে বিষিয়ে ওঠে বায়ু। সকলের অজ্ঞানতার জন্য তা একসময় ছাপিয়ে যায় মানুষের সহনসীমা। এখানেই শেষ নয়। ভাগাড়ে জমা হওয়া দিল্লি মহানগরীর বিপুল পরিমাণ নাগরিক ও শিল্প বর্জ্যপদার্থ নিয়মিতভাবেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় তার ভার লাঘবের জন্য। এই প্রথা দেশের সর্বত্রই কমবেশি প্রচলিত। বর্জ্য দহনের ফলে বাতাসে মিশে যাচ্ছে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ। এইসব দূষকের নিয়মিত সংযোজন বাতাসের দূষণের মাত্রা লাগামছাড়া করে তুলেছে।
বর্জ্য দহনের পাশাপাশি ধোঁয়াশা সমস্যার অন্যতম একটি কারণ হল অতিরিক্ত মাত্রায় যানবাহনের ধোঁয়ার নির্গমন। আজকের সমাজে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সূচক হল ব্যক্তিগত মালিকানার গাড়ির সংখ্যা। গাড়ি থাকা মানেই হল শ্রেণিচরিত্রের স্তর পরিবর্তন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে নাগরিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর বদল হয়েছে। এখন প্রায় সকলের ঘরেই গাড়ি। দিল্লিতে প্রায় ১০ মিলিয়ন সংখ্যক নানান ধরনের গাড়ি প্রতিদিন রাস্তা দাপিয়ে বেড়ায়। এর ফলে বাড়ছে যানজট, সড়ক দুর্ঘটনা আর মাত্রাহীন দূষণ। এর আগে দেখেছি এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে দিল্লি সরকার কখনও জোড়-বিজোড় সংখ্যার গাড়ি চালানোর নির্দেশিকা জারি করেছে, কখনও নিয়ন্ত্রণ করেছে গাড়ির যথেচ্ছ চলাচল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। গাড়ির ধোঁয়া প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টন মারণ দূষক ছড়িয়ে দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে হাইড্রোকার্বন , কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড , ভাসমান কনার মতো শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর পদার্থসমূহ। এই সমস্যায় জর্জরিত পৃথিবীর সমস্ত নগরীর আবাসিকরা।
বাতাসে ভেসে থাকা এইসব উপকরণ বায়ুবাহিত হয়ে ছড়িয়ে যায় বহু দূরে। সমস্যা এতটাই ভয়াবহ যে নাসার তরফে উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে সকলকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এই ধোঁয়াশা মেঘের আগ্রাসন বিষয়ে।
দিল্লির কলকারখানা, শিল্প এস্টেটগুলোর ভূমিকাও এক্ষেত্রে মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। দিল্লির কলকারখানা, নির্মাণশিল্প এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে গলগলিয়ে বাতাসে মিশছে হরেকরকমের দূষক। নয়ডা, গুরুগ্রামের মতো দিল্লি-লাগোয়া জনপদগুলোতে পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করেই লাগাতারভাবে চলছে গগনচুম্বী ফ্ল্যাটবাড়ির নির্মাণ। এর ফলে বিপুল পরিমাণ নির্মাণ-বর্জ্যপদার্থ নিয়মিতভাবেই মিশছে বাতাসে যার প্রভাবে তিলে তিলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জল, জমি আর বাতাসের মতো জীবনদায়ী উপাদানগুলো। দূষিত পরিবেশের প্রভাব মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ওপর গভীর ছাপ ফেলছে। দিল্লির ক্রাইম রেকর্ড তেমনটাই জানাচ্ছে। খবরের কাগজ খুললেই এমন ঘটনার কথা জানতে পারি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে যে দিল্লির এই বেহাল দশার পেছনে মূলত দায়ী এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার এক সমীক্ষাসূত্রে জানিয়েছে যে কৃষকদের নাড়া পোড়ানোকে এই অবস্থার জন্য দায়ী করা হলেও মূল অপরাধী হল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। সমীক্ষকদের মতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি খড় পোড়ানোর চেয়ে ২৪০ গুণ বেশি বায়ু দূষণ ঘটায়।
দিল্লি বাড়ছে তার নাগরিক পরিসীমার বহরে। তাল মিলিয়ে বাড়ছে আবাসিকদের সংখ্যা। ২৪ এর ডিসেম্বরে দিল্লি মেট্রোপলিটনের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩.৪ কোটি। ২০২৩ সালের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ২.৬৩ শতাংশ বেশি। জনসংখ্যার বৃদ্ধি মানেই হল পরিবেশ পরিমণ্ডলের ওপর চাপ বেড়ে যাওয়া। এ-বছর দিওয়ালিতে বাজি পোড়ানোর ফলে বায়ুর গুণগত সূচক মান অনেকটাই বেড়ে গিয়ে গড়পড়তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০-র দিকে । তবে অঞ্চলভেদে এই মান সূচক ছিল আরও আরও অনেক বেশি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে যে এই সূচক মান ছিল বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বিন্দুতে। সভ্যতার গগনচুম্বী গরিমা প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপন্ন করছি প্রতিনিয়ত। এও এক আশ্চর্য খেলা! এই খেলা শুরু হয়েছে আমাদের হাতে, তবে এর শেষ কোথায় তা এই মুহূর্তে হয়তো আমাদের জানা নেই।
শুধু দিল্লি নয়। দিল্লি মুম্বাই কলকাতা চেন্নাই-এর মতো ঐহিত্যবাহী জনপদগুলো আমাদের ভুলে ক্রমশই গভীর অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে। তাই দিল্লির সমস্যা কেবলমাত্র সেই মহানগরীর সমস্যামাত্র নয়, এটা গোটা পৃথিবীর সমস্যা। কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুরের মত শিল্পাঞ্চলগুলোতে দূষণের মাত্রা, দূষণ কণা পিএম ২.৫ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কারণ সর্বত্র একই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শহরতলির যেখানে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে গজিয়ে ওঠা ইটভাটা। বেআইনি এইসব কর্মকাণ্ডের কারণে বাতাস ভারি হয় বিষাক্ত ধূলো, ধোঁয়ায়। কিছুদিন আগে যমুনা নদীর দূষণ নিয়ে হইচই হল, এখন দিল্লির বাতাসের হাল নিয়ে হট্টগোল হচ্ছে। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রণালয় ইন্দিরা পৰ্য্যাবরণ ভবনের কর্মকর্তারা মৌনব্রত নিয়েছেন। দূষণ নিয়ন্ত্রণে সারা বছর ধরে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না সরকার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জনগণও সব দেখেশুনে নিশ্চুপ নির্বিকার। কারোর কোনো হেলদোল নেই। ধরা রসাতলে যাক, আমি আমার টাকার থলি নিয়ে সুখে আছি। নাগরিকদের এই মনস্তত্ত্বের বদল না ঘটলে দূষণ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাড়বে বই কমবে না।
দূষণের সবচেয়ে বড় বলি হচ্ছেন শহরগুলোর একেবারে নিচুতলার মানুষ। তাঁরা বাইরে বেরোতে বাধ্য হন পেটের জ্বালায়, কাজের তাগিদে। কেউ নির্মাণশিল্পে কাজ করেন, কেউ ইটভাটার শস্তা মজুর। কেউ বাইক নিয়ে রাতদিন দৌড়ন। বাইকে আরোহী তুলে বা আমাদের অর্ডার করা গরমাগরম খাবার পিঠে নিয়ে দিনরাত ছুটে বেড়ান। দূষণের হাত থেকে এঁদের নিস্তার নেই। শহরের বাবু বিবি তো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চেপে যান শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অফিসে বা শপিং মলে বা রেস্তোঁরায় যান। ছেলেমেয়েদের পৌঁছে দেন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত স্কুলে। তাঁদের আর ভাবনা কী? তাঁরাই আবার মহা সমারোহে তুমুল বাজি ফাটান। কালো বিষাক্ত ধোঁয়ায়, ধূলিকণায় অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষকে ছুটতে হয় হাসপাতালে।
মানুষের অন্তরাত্মা তবুও কেঁপে ওঠে না। বাজার সভ্যতার অন্ধগলিতে ছুটে চলা ব্যক্তিমানুষ সমাজবিচ্ছিন্ন। প্রকৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আটকে গেছে তাদের মানবিকতা। নিজেদের স্বার্থেই প্রকৃতিকে সুস্থ রাখার, বিপর্যস্ত প্রকৃতিকে আরও বিপন্ন না করে তার মেরামতির কথা আত্মস্থ করতে না পারলে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসনকে বাধ্য করতে হবে প্রকৃতি রক্ষার কাজে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। আপৎকালীন ব্যবস্থায় আর কিছু হওয়ার নয়, চাই দীর্ঘমেয়াদি বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা। এই ভাবনায় জারিত হওয়া, দাবিগুলো তোলার কি সময় আসেনি এখনো? আর কবে সে সময় আসবে? খুব শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হবে এমন নয়, কেননা একটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জটিল সমস্যার চটজলদি সমাধান খুঁজে পাওয়া খুব সহজ একদমই নয়। চেষ্টা চলছে এই মহাদূষণের কবল থেকে দিল্লিকে মুক্তি দেওয়ার। আসুন সবাই মিলে সেই দিনের জন্য
প্রতীক্ষা করি।