বাঙালীর ভাষা

ফাইল চিত্র

পূর্ব প্রকাশিতর পর
এই ধর্মলিপি খেপিঙ্গল পর্বতে দেবতাদের প্রিয় প্রিয়দর্শী রাজার দ্বারা লেখা (হল)। এখানে প্রজার হিতের জন্য মেলায় কোন জীব হিংসা করা কর্তব্য নয়। বহু দোষ মেলায় দেখেছেন দেবতাদের প্রিয় প্রিয়দর্শী রাজা। আছে এরকম মেলা (যা) ভালো মনে করা হয় দেবতাদের প্রিয় প্রিয়দর্শী রাজার দ্বারা। পূর্বে দেবতাদের প্রিয় প্রিয়দর্শী রাজার রসুইশালায় প্রত্যহ বহু শত-সহস্র প্রাণী হত্যা হত খাদ্য হিসাবে। তা আজ যখন এই ধর্মলিপি লেখা হল (তখন) কেবল তিনটি প্রাণী হত্যা হয়। দুটি ময়ূর (ও) একটি মৃগ। সে মৃগ হত্যাও নির্দিষ্ট নয়। এই তিনটি প্রাণীও পরে হত্যা (করা) হবে না।

যদিও স্বাভাবিক ভাবে ধরা হয় যে মধ্যভারতীয় আর্য ভাষা থেকেই কালক্রমে নব্যভারতীয় আর্য ভাষার উদ্ভব ঘটেছে। তবে এই ধারণা সর্বাংশে প্রমাণ করার উপাদানের অভাব আছে। কারণ মধ্যভারতীয় আর্য ভাষা থেকে নব্য ভারতীয় আর্য ভাষায় প্রত্যক্ষ সংযোগ আমরা দেখতে পাই না। এতৎসত্ত্বেও ‘বসুদেব হিন্ডী’ ‘পউম চরিউ’, ‘সমরাইচ্চ কহা’ প্রভৃতি কতকগুলি গ্রন্থ থেকে আমরা মধ্যভারতীয় আর্যভাষা এবং নব্যভারতীয় আর্য ভাষার মধ্যে সংযোগসূত্র উদ্ধার করতে পারি। যদিও এদের মধ্যে নব্য অপেক্ষা মধ্য ভারতীয় আর্যের লক্ষণই প্রকটতর। কেননা মধ্য ভারতীয় আর্যভাষাই তখন সাহিত্য-সিদ্ধ।

অপভ্রংশ (চ)
মধ্য ভারতীয় আর্যস্তর ও অবহট্ঠ স্তরের মধ্যবর্তী সময়ে এমন কিছু রচনা পাওয়া যায় যার ভাষা ছাঁদ দুই স্তরের ভাষাতাত্ত্বিক বিশিষ্টতারই অধিকারী। প্রাচীন বৈয়াকরণেরা এই রচনার ভাষা ও অবহট্ঠে রচিত সাহিত্যের ভাষাকে এক বিবেচনা করে ‘অপভ্রংশ’ নাম দিয়েছেন। সূক্ষ্ম ভাষাতাত্ত্বিক বিচারে এই দুই শ্রেণী মধ্যে স্বাতন্ত্র্য নজরে পড়ে১। অপভ্রংশের উদাহরণ – রন্ধণ-কম্ম-ণিউণিএ মা ঝুরস্সু রওপাডলসুঅন্ধং।
(ক্রমশ)