ভারতের প্রকৃত বন্ধু

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। (Photo: IANS/PIB)

কয়েকদিন আগেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর যখন বাংলাদেশ সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তখনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির বাংলাদেশ সফরের সুচি ঠিক হয়ে যায়। মার্চ মাসের ২৫-২৬ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির বাংলাদেশ সফরের সূচি নির্ধারিত হয়েছে।

বস্তুত ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাকিস্তান। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘােষিত হয়। চলতি বছরটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত কারণেও ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়া জরুরি। বাংলাদেশর ভৌগােলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার শুধু নয় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সীমানা থাকায় এর গুরুত্ব আরও বেশি ভারতের কাছে।


এজন্যই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আরও বেশি করে নিবিড় করা জরুরি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মােদির বাংলাদেশ সফর এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের। এবার মােদির ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’ রূপায়ণই প্রধান লক্ষ্য।

বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মেমনের সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকের পর ভারতের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য হল দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলােচনা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এতটাই বন্ধুত্বপূর্ণ যে দ্বিপাক্ষিক আলােচনায় যে কোনও বিষয়েই মতৈক্য হওয়া সম্ভব। নরেন্দ্র মােদি ও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে সকলেই ওয়াকিবহাল।

তিস্তার জল বন্টন নিয়ে এখনও কোনও সমাধান হয়নি। বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিরা লাগাতারভাবে জাল নােটের পাচার করে ভারতের অর্থনীতিকে অস্থির করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ ইস্যু পরবর্তী পর্যায়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলােচনা হওয়ার কথা।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলােচনা বিলম্বিত হওয়া স্বাভাবিক। ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কে খানিকটা চিড় ধরায় এখন বাংলাদেশ ও ভুটানই প্রকৃত বন্ধু সার্ক দেশীয় জোটে।

ফলে এবার নরেন্দ্র মােদির বাংলাদেশ সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত করােনা অতিমারির পর নরেন্দ্র মােদির এটাই প্রথম বিদেশ সফর হতে চলেছে এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার। তবে করােনা মােকাবিলা, যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি, বাণিজ্য, জল, নিরাপত্তা, সীমান্ত ইত্যাদি বিষয়ে আলােচনা হওয়ার সম্ভাবনা।

তবে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশে করােনা প্রতিষেধক প্রকল্প রূপায়ণের ওপরেই বেশি জোর দিয়েছেন।