পুজোয় কেনাকাটার টাকা জোগাড় করতে টোটোচালককে খুন

পুজোয় পরিবারের সদস্যদের জামা কিনে দিতে পারেননি। সেই কারণে টোটো চালককে খুন করে টোটোর ব্যাটারি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে এক ভ্যানচালক ও ব্যাটারি কেনার অভিযোগে আরও দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ পঞ্চমীর দিন মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার কুদবাপুকুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। খুনে ধৃত ব্যক্তি জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।

মৃতের নাম আলহামিন শেখ (৩০)। তিনি দৌলতাবাদ থানার অন্তর্গত দেবীদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা। পঞ্চমীর দিন বিকেলে তিনি বহরমপুর শহরে ভাড়া খাটতে টোটো নিয়ে এসেছিলেন। সেই দিন বহরমপুর শহরের চুঁয়াপুর এলাকার বাসিন্দা সুজন হাজরা (৩৫) মোহনা বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে তাঁর টোটোটি ভাড়া নেন। রাতের দিকে একটি নির্জন জায়গায় টোটোটি দাঁড় করাতে বলেন সুজন। সেই মতো টোটো দাঁড় করাতেই চালক আলহামিন শেখের উপর হামলা চালান তিনি। তাঁকে ব্যাপক মারধর করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে আলহামিনের খোঁজ না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন আলহামিনের পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার দুই দিন পর কুদবাপুকুর এলাকার একটি পুকুর থেকে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে জানা যায় মৃতদেহটি আলহামিনের। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, আলহামিনকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে সুজন হাজরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, দুর্গাপুজোর সময় সুজন প্রচন্ড আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন। পরিবারের সদস্যদের জামাকাপড়ও কিনে দিতে পারেননি। সেই কারণে হঠাৎ করে ওই টোটো চালককে খুনের পরিকল্পনা করেন। দুই জনের মধ্যে পূর্ব কোনও শত্রুতা ছিল না।


আলহামিনকে খুনের পর টোটোটিকে জগন্নাথ ঘাটের কাছে নিয়ে আসে সুজন। সেখানে উকিল চৌধুরি নামে এক ভ্যানচালকের সাহায্য নিয়ে টোটোর ব্যাটারিগুলো খুলে নেন তিনি। তারপর গজধরপাড়া এলাকার বাসিন্দা নিরুজ্জামানকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ব্যাটারিগুলি বিক্রি করে দেন। নিরুজ্জামান আবার সেগুলি জামাল শেখ নামে অন্য এক ব্যক্তিকে বিক্রি করেন। সুজন সহ বাকি প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।