পুজোর আগে সুখবর পেলেন বহরমপুর পুরসভার শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। আগামী ১০ মাসের মধ্যে তাঁদের বকেয়া গ্র্যাচুয়িটির টাকা সুদ–সহ মেটাতে হবে পুরসভাকে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদেশনামায় আরও জানানো হয়েছে, ১০ মাসের মধ্যে পুরসভা গ্র্যাচুয়িটির টাকা মেটাতে ব্যর্থ হলে রাজ্য সরকার পুরসভাকে সাহায্য করবে।
রাজ্যের একাধিক পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্মচারীই অবসর নেওয়ার পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও গ্র্যাচুয়িটির টাকা পাচ্ছেন না। পুরসভা ও পুরনিগমগুলির বেহাল আর্থিক অবস্থার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে এই সব কর্মীদের টাকা মেটানোর বিষয়ে অনিহা দেখিয়েছে রাজ্য সরকারও। অর্থাৎ পুরসভাগুলির নিজস্ব আয় থেকে এই বকেয়া মেটানোর কথা বলা হয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন রাজ্যের সাতটি পুরনিগম এবং ১২১টি পুরসভায় অবসরপ্রাপ্ত কয়েক হাজার কর্মচারী। সেরকমই বহরমপুর পুরসভার প্রায় ১২৭ জন কর্মচারী অবসর নেওয়ার দীর্ঘদিন পরও প্রাপ্য গ্র্যাচুয়িটির টাকা না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এই কর্মীদের বেশিরভাগই ২০১১–১২ সালে অবসর গ্রহণ করেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের প্রাপ্য টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা।
হাইকোর্টের নির্দেশনামায় জানানো হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী কোনও সরকারি কর্মী অবসর নেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাঁকে গ্র্যাচুয়িটির টাকা না দেওয়া হলে সুদ-সহ সেই টাকা দিতে হবে। বহরমপুর পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে ৮ শতাংশ বাৎসরিক সুদের হারে বকেয়া প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। আগামী ১০ মাসের মধ্যে এই টাকা মেটানো না হলে পুরসভাকে ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। সম্পত্তি করের আয় থেকে পুরসভা যদি অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের গ্র্যাচুয়িটির টাকা মেটাতে না পারে তাহলে পুরসভাকে প্রয়োজনীয় অর্থ দিয়ে সাহায্য করবে রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তর।
হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখার্জি জানিয়েছেন, ১২৭ জন মামলা করলেও প্রায় ৪৫০ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর টাকা বাকি রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবে পুরসভা।