কর্ণাটকে পরিযায়ী শ্রমিক খুন, মালদহের দিলালপুরে শোকের ছায়া

ভিনরাজ্যে পিটিয়ে খুন করা হল মালদহের এক পরিযায়ী শ্রমিককে। নৃশংস এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে জেলার দিলালপুর এলাকায়। নিহত শ্রমিক খাইরুল জামাল (৫৪) কর্ণাটকের মহিশুর জেলায় কাজ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় প্রাণ হারান বলে অভিযোগ।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাজের খোঁজে মহিশুরে যান খাইরুল। অভিযোগ, বুধবার গভীর রাতে একদল দুষ্কৃতী তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরদিন সকালে সেই মর্মান্তিক খবর পৌঁছয় মালদহের গ্রামে। খবর পাওয়া মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। খাইরুলের পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হলেও ছোট মেয়ে এখনও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত শ্রমিকের বাড়িতে যান জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার ও সংগঠনের অন্যান্য নেতৃত্ব। তাঁরা শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন এবং ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তাঁদের অভিযোগ, ‘ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকরা বারবার টার্গেট হয়ে হামলার শিকার হচ্ছেন।’


উল্লেখ্য, এর আগেও ভিন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্দেশখালির বাসিন্দাদের বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছিল। ফরাক্কার শ্রমিকরাও ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও তোলপাড় শুরু হয়েছে। রাজ্য রাজনীতিতে বারবার তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টি উত্থাপন করেছে। সংসদ থেকে শুরু করে জনসভা— সর্বত্রই বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু এবার খাইরুল জামালের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে— আদৌ কী কারণে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হল? পরিবার ও গ্রামের মানুষজনের দাবি, এই হত্যার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ন্যায্য বিচার চাইছেন তাঁরা।