দেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলন করতে গ্লোবাল টেণ্ডার

প্রতীকী চিত্র

রাজ্যস্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের আর পাঁচটা সফরের মতো ছিল না এ সফর। রাজ্য প্রশাসনের ভর কেন্দ্র নবান্ন থেকে ইংরেজি নববর্ষের প্রথমেই ২ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে গিয়ে জেলার নদ-নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন করে পাচারের বিষয়টি যেমন উল্লেখ করেছিলেন, তেমনি মহম্মদবাজারের দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনির কাজের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এবং তার পরদিনই ৩ জানুয়ারি রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম, বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু ও অন্যান্য আধিকরিকরা মহম্মদবাজারে এসে মহম্মদবাজার ব্লক অফিসের সভাঘরে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করে প্রস্তাবিত দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি থেকে কী ভাবে কয়লা উত্তোলন করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে যান।

সে দিন সভা শেষে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়ে গিয়েছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁরা এখানে এসে বৈঠক করলেন এবং কী ভাবে কয়লা উত্তোলন করা হবে, সেই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে গ্লোবাল টেণ্ডার ডাকা হবে।

সেই সূত্রেই এবার দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য গ্লোবাল টেণ্ডার ডাকলো ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখানকার দেউচা-পাঁচামি, দেওয়ানগঞ্জ, হরিণশিঙা এলাকার ৩ হাজার ৪০০ একর এলাকা জুড়ে হবে এই কয়লা উত্তোলনের কাজ। এই প্রকল্পে ২ হাজার একর এলাকায় হবে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিং আর ১ হাজার ৪০০ একরে হবে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল গ্যাসিফিকেশনের কাজ। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর এই কাজ হলে সরাসরি ১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে বলা হচ্ছে। এটি হবে আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিং প্রজেক্ট। যাতে আদিবাসী অধ্যুষিত এখানকার কম সংখ্যক মানুষকে বাস্তুচ্যুত হতে হয়, সে জন্যই আন্ডারগ্রাউন্ড কোল মাইনিং প্রজেক্টের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।


এই গ্লোবাল টেণ্ডারের ক্ষেত্রে বরাত পেতে হলে কয়লাখনি প্রকল্পের বিস্তারিত নক্সা, খনির পরিকল্পনা এবং ডিপিআর, সর্বাধিক সম্ভাব্য কয়লা খনন ও কয়লা উত্তোলন পদ্ধতি, নিরীক্ষিত হিসাব ও কয়লা উত্তোলনের অতীত অভিজ্ঞতাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এখানকার ভূগর্ভের মাটি উত্তোলনের পরে তা পরীক্ষা করে কয়লার মানও নির্ধারণ করে নিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন।