আলু বিক্রি করে উধাও হিমঘরের মালিক, মাথায় হাত আলু চাষিদের

বন্ধ সেই হিমঘর।

বীজ বোনার মরসুমে হিমঘরের তালা বন্ধ দেখে কার্যত মাথায় হাত আলু চাষিদের। অভিযোগ, বস্তা বস্তা আলু বিক্রি করে উধাও হয়ে গিয়েছেন হিমঘরের মালিক। আলু ফেরত না পেয়ে ক্ষতির আশঙ্কায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আলিপুরদুয়ারের আলু চাষীদের মধ্যে। বিষয়টি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটি আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের কয়াখাতা এলাকার একটি হিমঘরকে কেন্দ্র করে। শামুকতলা থানার চিকলিগুড়ির বাসিন্দা আলু চাষি মৃনাল দাস জানান, তিনি প্রায় ১০০ প্যাকেট আলুর বীজ ওই হিমঘরে মজুত করেছিলেন। আলু চাষের সময় শুরু হওয়ায় বীজ আনতে হিমঘরে গিয়ে তিনি দেখেন, হিমঘর বন্ধ। মালিকপক্ষের কোনও খোঁজ নেই। পরে জানতে পারেন, তাঁর রাখা আলুর বীজ নাকি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

আলু চাষিদের অভিযোগ, হিমঘর কর্তৃপক্ষ কোনও রকম আগাম জানানো ছাড়াই তাঁদের মজুত করা আলু বিক্রি করে দেয়। এরপর হিমঘর বন্ধ করে মালিকপক্ষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাষিরা। অনেকেরই অভিযোগ, বীজ না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাজার থেকে বেশি দামে বা ধার করে আলুর বীজ কিনে চাষ করতে হচ্ছে কৃষকদের।


এক আলু চাষি বলেন, ‘এখন আলু চাষের ভরা মরসুময়। বীজ না পেয়ে বিপাকে পড়েছি। হিমঘরের মালিকের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। শেষমেশ ধার করে বীজ এনে চাষ শুরু করেছি।’ স্থানীয় আরও এক কৃষক বলেন, হিমঘরে আলু রেখে এমন প্রতারণার শিকার হতে হবে, তা ভাবতে পারিনি। আমরা চাই, দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।

একই অভিযোগ তুলেছেন আর এক আলু চাষি অমর রায়। তিনি জানান, আলুর দাম আরও বাড়ার আশায় প্রায় ৫০ প্যাকেট আলু ওই হিমঘরে রেখেছিলেন। সম্প্রতি দাম কিছুটা বাড়ায় আলু তুলতে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর আলুও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। হিমঘরের মালিকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনার পর আলু চাষিরা শামুকতলা রোড পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। হিমঘরের মালিক কোথায় গিয়েছেন এবং আলু বিক্রির অভিযোগ কতটা সত্য, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বীজ বোনার মরসুমে এই ঘটনায় আলু চাষে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।