কলকাতার মহাজাতি সদনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রুদ্রাগ্নি ক্রিয়েটিভ এন্ড ক্লাসিক্যাল ড্যান্স একাডেমির পনেরো বছর পূর্তি উপলক্ষে বাৎসরিক নৃত্যানুষ্ঠান। রবিবার দর্শকপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি ছিল শাস্ত্রীয় নৃত্যের এক মনোজ্ঞ মিলনমেলা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ওডিসি নৃত্যগুরু, সঙ্গীত নাটক একাডেমি সম্মানে ভূষিত গুরু শ্রীমতি আলোকা কানুনগো এবং বিশিষ্ট ভরতনাট্যম নৃত্যগুরু শ্রী প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়। সমাজের বিভিন্ন স্তরের বহু গুণীজনও উপস্থিত থেকে শিল্পীদের উৎসাহিত করেন।
এই বিশেষ দিনে রুদ্রাগ্নির প্রায় ৩৫০ জন ছাত্রছাত্রী মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেন। সমগ্র অনুষ্ঠানের নৃত্য পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রুদ্রাগ্নির সম্পাদিকা শ্রীমতি উদিতা রায় পাল চৌধুরী। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল রুদ্রাগ্নির নতুন শাস্ত্রীয় নৃত্য প্রযোজনা “সম্ভাবামি যুগে যুগে”। শ্রীকৃষ্ণের জীবনকথা অবলম্বনে নির্মিত এই প্রযোজনার স্ক্রিপ্ট রচনা করেন শ্রী শাশ্বত বেরা ও শ্রী গৌতম বোস। ভরতনাট্যম ও ওডিসি নৃত্যের আঙ্গিকে গাঁথা এই প্রযোজনাটি দর্শকদের গভীরভাবে মুগ্ধ করে এবং উপস্থিত গুণীজনদের প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুদীপ্তা মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি রুদ্রাগ্নির নতুন সামাজিক উদ্যোগ হিসেবে সারদেশ্বরী আশ্রমের আবাসিক মেয়েদের জন্য অবৈতনিক নৃত্য প্রশিক্ষণের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেই প্রকল্পের ছাত্রীরাও মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে রুদ্রাগ্নির কর্ণধার উদিতা রায় পাল চৌধুরী জানান, গত তিন মাসের নিরলস প্রচেষ্টা এবং ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সহযোগিতাতেই এই বৃহৎ পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি রুদ্রাগ্নির সমস্ত ছাত্রছাত্রী, সদস্য ও অভিভাবকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেও মহাজাতি সদনের মতো প্রেক্ষাগৃহে দর্শকপূর্ণ অনুষ্ঠানই এই আয়োজনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। এই সাফল্য রুদ্রাগ্নিকে আগামী দিনে আরও নতুন ও সৃজনশীল নৃত্য প্রযোজনা উপস্থাপনে অনুপ্রাণিত করবে বলেই শিল্পীমহল আশাবাদী।