ইন্দ্রধনুর পনেরো বর্ষপূর্তি

হারমোনিয়াম মায়েস্ত্রো পন্ডিত জ্যোতি গুহ প্রতিষ্ঠিত শাস্ত্রীয় সংস্থা ইন্দ্রধনু পথ চলার পনেরো বছর পুর্তি করেছে। এই সিরিজের প্রথম অনুষ্ঠানটি হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে, রাজধানী দিল্লিতে। এরপর একে একে এই রাজ্যের কৃষ্ণনগর, মেদিনীপুর, কলকাতার অজিতেশ মঞ্চ করবার শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানটি হলো রোটারি সদনে। ফেব্রুয়ারির পাঁচ তারিখে। পিতার সাথে এখন যৌথভাবে হাল ধরেছেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র ও তবলাবাদক সৌরভ গোহ। বিশেষ এই উদ্যোগে এবারে সহযোগী হিসেবে পেয়েছিলেন সংগীত মহলে পরিচিত ব্রান্ড ‘লিজেন্ডস্ অফ ইন্ডিয়া’ ও দ্বীপায়ন মজুমদারকে। মার্জিত অনুষ্ঠানের শুরু হয় বিশিষ্ট অতিথি ও চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষকে সম্বর্ধনা প্রদান মারফত। এই কাজটি সুসম্পন্ন করেন দ্বীপায়ন মজুমদার। শোনা গেল মুখ্য অতিথি গৌতম ঘোষের বক্তব্য। তাঁর মতে, সবকিছু পাল্টে গেলেও সাত সুর ও পাঁচটা কোমল একেবারেই পাল্টায়নি! ২০০৯ সালে স্থাপিত ইন্দ্রধনু সংস্থাটি অনুষ্ঠান করা শুরু করে ২০১৩ সাল থেকে। অনলাইন-অফলাইনে ভোকাল, তবলা ও হারমোনিয়াম… এই তিনটি বিভাগে তালিম দেওয়া হয়।

এবারে মূল অনুষ্ঠানে প্রবেশ। শুরুতেই কত্থক উপস্থাপনা করলেন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া প্রবাসী ও পন্ডিত চিত্রেশ দাসের শিষ্য বঙ্গতনয়া লাবনী মোহান্ত। তিনি শিববন্দনা, ঝাঁপতালে (দশ মাত্রা) ঠাট, বোল-পরণ, তৎকার কী বন্দিশ, ফরমাইসি ইত্যাদি উপস্থাপন করেন। ভাল লাগল গত-ভাব অংশে ‘শকুন্তলা-দুষ্মন্ত’ পরিবেশনা। শেষ করেন রাগ যোগকৌষ আধারে তারাণায়। তাকে মঞ্চে লাইভ সহযোগিতা করেন— রোহেন বোস (তবলা), জয়ন্ত ব্যানার্জি (সেতার) অরিন্দম ভট্টাচার্য (কন্ঠ)। বোল-পরন্তে কাউকে রাখলে ভালো করতেন। এদিনের দ্বিতীয় শিল্পী মাইয়ার ঘরের পন্ডিত দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী সেতারে পরিবেশন করেন রাগ মারবা। আলাপ ও জোড়ের পর ছিল গত পরিবেশনা— বিলম্বিত ও দ্রুত (ত্রিতাল); শেষে ঝালা। একটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। তবলায় থাকা সৌরভ গোহের সাথে সুন্দর বোঝাপড়া ও অনুভবী ঠেকা বাজনাটিতে ভীষণই অন্য মাত্রা যোগ করে। এই সন্ধ্যা তথা পনেরো বছর উদযাপনের সমাপন ঘটে বিশিষ্ট হারমোনিয়াম বাদক পন্ডিত জ্যোতি গোহের একক উপস্থাপনায়। চয়ন করেছিলেন রাগ যোগ (ঝাঁপতাল গত), রাগ হংসধ্বনি (ত্রিতাল), পিলু। আর শেষ করলেন ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ে’ পরিবেশন মাধ্যমে। তবলায় ছিলেন পন্ডিত অরূপ চট্টোপাধ্যায়।