ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের জেরে মার খাচ্ছে সুরাতের হিরে ব্যবসা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

কথায় বলে, ‘রাজায় রাজায় লড়াই হয়, আর উলু খাগড়ার প্রাণ যায়’। বহুল প্রচলিত এই প্রবাদ এবার বাস্তব হতে চলেছে গুজরাতের হিরে শিল্পের ক্ষেত্রে। ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের জেরে এবার মার খেতে চলেছেন সুরাতের হিরে ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন মুলুকে হিরে রপ্তানি প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। এর জেরে বহু কর্মী তাৎক্ষণিকভাবে কর্মহীন হয়ে পড়ারও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

সুরাতের হিরে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সারা বছরে যত ব্যবসা হয়, তার প্রায় অর্ধেকই হয় বড়দিনের মরসুমে। এই সময় সুদূর মার্কিন মুলুক থেকেও প্রচুর হিরের বরাত আসে। কিন্তু শুল্কযুদ্ধের জেরে সেই ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। প্রতিযোগিতা বেড়েছে আমেরিকার হিরের বাজারেও। ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির জেরে একের পর এক অগ্রিম বরাত বাতিল হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এমনটা চলতে থাকলে অচিরেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের হিরে রপ্তানি শিল্প।

জানা গিয়েছে, ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতির জেরে বড়দিন উপলক্ষে মার্কিন গ্রাহকদের থেকে অগ্রিম পাওয়া বরাতগুলির বেশির ভাগই বাতিল হয়ে গিয়েছে। ফলে হিরে কাটা এবং গয়না তৈরির কাজ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুরাতের অধিকাংশ হিরে ব্যবসায়ীরা। রত্ন ও গয়না রপ্তানি প্রচার কাউন্সিলের (জিজেইপিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আমেরিকায় যত বিদেশি হিরে আমদানি হয়েছে, তার ৬৮ শতাংশ গিয়েছে ভারত থেকেই। আবার দামের হিসেবে মোট হিরের ৪২ শতাংশ রপ্তানি হয়েছে ভারত থেকেই।


কিন্তু ট্রাম্প প্রথমে ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর ফের আরও ২৫ শতাংশ জরিমানা ধার্য করায় মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। আর তাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ভারতের হিরে ব্যবসায়। কিন্তু ইজরায়েল থেকেও আমেরিকা প্রচুর হিরে আমদানি করে থাকে। বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে হিরে রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইজরায়েল। কিন্তু ইজরায়েলের ক্ষেত্রে ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেছেন মাত্র ১৯ শতাংশ। সুতরাং ভারতীয় হিরে ব্যবসায়ীরা আমেরিকায় যে যথেষ্ট প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।