ভারতীয়দের এখন মাথাপিছু ঋণের বোঝা এক লক্ষ ৩২ হাজার টাকা

প্রতীকী চিত্র

মোদী সরকারের শাসনকালে দেশের নাগরিকদের মাথায় বাড়ছে ঋণের বোঝা। দেশের প্রতিটি নাগরিকের এখন মাথাপিছু ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে এক লক্ষ ৩২ হাজার ৫৯ টাকা ৬৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চের হিসেব অনুযায়ী এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সোমবার লোকসভায় এ বিষয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী দাবি করেন, সরকারের লক্ষ্য ২০৩০-৩১ সালের মধ্যে দেশের ঋণের বোঝা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা।

কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে দেশের আর্থিক ঋণের উপর সুদের বোঝা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। শুধুমাত্র ২০২২-২৩ আর্থিক বছরেই এই খাতে সরকারের খরচ হয়েছে ৯.২৯ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে খরচ হয়েছে ১০.৬৪ লক্ষ কোটি টাকা। আবার ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে খরচ হয়েছে ১১.১৮ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে সেই অঙ্ক বেড়ে  ১২.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, সংসদের বাদল অধিবেশনে সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দেশের নাগরিকদের এখন মাথা পিছু ঋণের পরিমাণ কত? এরপরই কেন্দ্রের মোদী সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়, যা শুনে চোখ কপালে ওঠে সাংসদদের। চমকে গিয়েছে গোটা দেশ। আরও জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশের ঋণের বোঝা ছিল ৮১.২৯ শতাংশ। ২০২৫ সালে সেটা ৮০ শতাংশে নামতে পারে।


যদিও কীভাবে এই অসাধ্যসাধন করা সম্ভব হবে, তার কোনও বিস্তারিত রূপরেখা প্রকাশ করেননি অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী। কীভাবে এই ঋণের বোঝা কমানো সম্ভব হবে, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি দাবি করেন, রাজকোষ ঘাটতি কমিয়েই ঋণের বোঝা  কমানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। গত অর্থবর্ষে জিডিপির জন্য ৪.৮ শতাংশ আর্থিক ঘাটতি ছিল। চলতি অর্থবর্ষে সেটা ৪.৪ শতাংশে নামানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০৩১ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে জিডিপির ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনাই কেন্দ্র সরকার লক্ষ্য।

প্রসঙ্গত, অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের ঘাড় থেকে ঋণের বোঝা কমবে কিনা, তা জানতে হলে এ ব্যাপারে কেন্দ্র সরকারের পরিকল্পনাটিও জানা জরুরি। কারণ সরকার দেশ এবং বিদেশের বাজার থেকে কত পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে, সেই ঋণের টাকা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে, কোনও দান খয়রাতি করা হচ্ছে কিনা, ঋণ শোধ করার মতো বিকল্প পথ সরকারের হাতে আছে কিনা তারা সামগ্রিক বিচার করেই বলা সম্ভব। সরকারের ঋণের অঙ্ক বাড়তে থাকলে ঝুঁকিও বাড়ে। বিশেষ করে দেশের বাজার থেকে ঋণ নিলে সুদের হার বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই ঋণ শোধ করার জন্য সরকারের উপযুক্ত আর্থিক বৃদ্ধি ঘটনোও জরুরি।