‘শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন আসবেই’

শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন (Photo by Himanshu SHARMA / AFP)

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জানিয়েছিলেন আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ২৩৫’টি ট্রেনে করে ভিনরাজ্যে থাকা বাংলার সব শ্রমিককে ফিরিয়ে আনবেন। তাঁর এই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রেল জানিয়ে দিল, রাজ্যের আর অনুমতির দরকার নেই। এবার থেকে রেল ইচ্ছে মতো শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন পাঠাবে বিভিন্ন রাজ্যে।

এতদিন যেখানে শ্রমিকদের ফেরানো হচ্ছে সেখানকার রাজ্য সরকারের অনুমতি নেওয়া হচ্ছিল। রেলের এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজ্যের সঙ্গে এই নিয়ে সংঘাত হচ্ছে। সেকারণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল।

প্রথম লকডাউন ঘোষণা হয় ২৪ মার্চ। সেই সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ভিন রাজ্যে আটকে থাকা শ্ৰমিকরা নিজেদের রাজ্যে ফিরতে অধৈর্য হয়ে উঠছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাধা দেয়।


অন্যদিকে কেন্দ্র আবার ট্রেনের টিকিটের দাম রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দেয়। এই নিয়ে টানাপোড়েন আজও অব্যাহত রয়েছে। বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বাধা দিয়েছিল। বিহার ফেরাতে রাজি ছিল না, আর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রস্তুতি ছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরালে হিতে বিপরীত হতে পারে, এই নিয়ে টালবাহানা চলছিল।

পরে অবশ্য দুই রাজ্যই কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে রাজ্যে শ্রমিকদের ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। রেলকে রাজ্যে ট্রেন ঢোকানোর অনুমতি দেয়। তবে এবার আর সে অনুমতির অপেক্ষা করবে না কেল, এমনটাই জানা গিয়েছে মঙ্গলবার। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যকে।

অন্যদিকে, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি পরিযায়ী শ্রমিকদের ভাড়ার ব্যবস্থা করবে কংগ্রেস, এমনটাই জানিয়েছিলেন। এমনই এক আবহের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু মিছিল দেখেছে দেশ। এর মধ্যে সিংহভাগ মারা গিয়েছেন পথদুর্ঘটনায়। ঘরে বাইরে চাপের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার।

অবশেষে পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে মুখরক্ষা করতে রেল সিদ্ধান্ত নিল যেখান থেকে শ্রমিকরা যাবেন এবং যেখানে যাবেন। তার জন্য আর কোনও রাজ্যেরই অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রেলকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যাতে রাজ্যে কোনও ট্রেন পাঠানো না হয়। কারণ, বাংলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আছড়ে পড়ার ভয় রয়েছে। সেই কারণে এই আর্জি।