ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে পিছু হটছে সরকার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

বিভিন্ন স্কুলে ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগের পরিকল্পনাটি বাস্তবে সম্ভব হবে না বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। সােমবার বিধানসভায় এরকমই ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

গত ১৪ জানুয়ারি, মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ঘােষণা করেছিলেন, বিভিন্ন স্কুলে ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগ করা হবে। দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে স্বল্প সময়ের জন্য স্কুলগুলিতে ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগ করে শিক্ষকের অভাব মেটানাের কথা পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

লােকসভা নির্বাচনের পর সেই প্রকল্প থেকে পিছু হটার কথা বললেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব ঘােষণার ওপর কোনও মন্তব্য না করলেও এদিন পার্থবাবু বলেন, পরিস্থিতি অনেকটা বদলে গিয়েছে। আগে মনে করা গিয়েছিল, পাশ করা কিছু প্রার্থীদের মধ্যে থেকে বাছাই করে যদি ইন্টার্ন নিয়ােগ করা যায়। কিন্তু নানা কারণে, নানান স্তরে আবেদনকারীরা আদালতে গিয়ে নিয়ােগ প্রক্রিয়া আটকে দিচ্ছে। তাই ওই পরিকল্পনা রূপায়িত করা যাবে না। তবে নির্দিষ্ট শুন্য পদ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়মের মধ্যেই পূরণ করা হবে। মন্ত্রিসভার তরফে সব রকমের চেষ্টা চলছে। আইনি বাধা না এলে জুলাই মাসের মধ্যেই শূন্য পদে নিয়ােগ সম্পন্ন করা যাবে।


এদিন ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে বিধানসভায় নানান বাদানুবাদ ঘটে। কংগ্রেসের তরফে অসিত মিত্র প্রশ্ন তােলেন, এই বর্তমান শিক্ষাবর্ষ প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে কবে থেকে ইন্টার্ন শিক্ষক নিয়ােগ শুরু হবে? বামফ্রন্টের সুজন চক্রবর্তী এদিন টেট দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তােলেন।

বিরােধীদের এইসব প্রশ্নের উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বামফ্রন্টের বিধায়কদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারাই বিভিন্ন ধরনের শিক্ষকদের নিয়োগ করে গিয়েছিলেন। তা সামাল দিতে আমাদের হাবুডুবু খেতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী তাে মানবিকতার খাতিরেই এত ধরনের শিক্ষকদের চাকরির স্থায়িত্ব বিঘ্নিত করেননি। তবে পার্থবাব ঘােষণা করেন, শিক্ষক নিয়ােগ প্রক্রিয়া এবং আইন দ্রুত সরলীকরণ করা হবে।

টেট দুর্নীতি নিয়ে সুজন চক্রবর্তীর প্রসঙ্গের উত্তরে পার্থবাবু বলেন নিয়ােগে দুর্নীতি না থাকলে আদালত অবধি বিষয়টি গড়াত না। আপনাদের আমলে ২০১১ সালের আগেও শিক্ষক নিয়ােগে দুর্নীতি ছিল। কিন্তু তখন টেলিভিশন চ্যানেল এত সক্রিয় ছিল না। এখন টেলিভিশন চ্যানেলগুলি দ্রুত তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

সেইসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, শিক্ষক নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় আমি নিজে অংশ নিই না। কোথায় কোন স্বার্থান্বেষী কাজ হয়েছে বা গাফিলতি হয়েছে তা জানা নেই। বর্তমান সরকারের আমলে নিয়োগ নিয়ে মামলা থাকলেও শিক্ষক নিয়ােগ আটকে যায়নি।

তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে এদিন পার্থবাবু পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়ে দেন প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে বর্তমান সরকার কত শিক্ষক নিয়ােগ করেছেন। ২০১৭-১৮ সালে ৪২ হাজারের মতাে শিক্ষক নিয়ােগ হয়েছে প্রাথমিকে। ২০১২-১৩ সালে মাধ্যমিকের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৩০ হাজারের মতাে এবং ২০১৮-১৯ সালে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ১২ হাজারের মতো শিক্ষক নিয়ােগ করা হয়েছে।