করোনায় মৃত বেড়ে ৭২, চব্বিশ ঘন্টায় আক্রান্ত ১১২ জন : স্বরাষ্ট্রসচিব

র‍্যান্ডম টেস্টিং করছে এক স্বাস্থ্যকর্মী। (Photo: AFP)

লকডাউনে ছাড়ের পরিধি বাড়ানোর পর রাজ্যে একদিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এই প্রথম একশোরও বেশি হল। গত চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১১২’তে। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ফলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৪৫৬ জন। গত চব্বিশ ঘন্টায় রাজ্যে করোনায় মারা গিয়েছেন ৪ জন। ফলে করোনায় সরাসরি মৃতের সংখ্যা হল ৭২।

এছাড়া অডিট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী কো-মরবিডিটির কারণে মারা গিয়েছেন আরও ৭২ জন। এখনও পর্যন্ত মোট ২৬৫ জন সেরে উঠেছেন। এ পর্যন্ত করোনা অ্যাকটিভ ১০৪৭ জন। বুধবার নবান্নে একথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

করোনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা যে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে সেকথা জানাতে বুধবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজ থেকে একমাস আগে পর্যন্ত এই রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা হত দিনে আড়াইশো করে। এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দু’হাজার। খুব তাড়াতাড়ি এই সংখ্যাটা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এখন রাজ্যে ১৫’টি ল্যাবরেটরি রয়েছে। এর মধ্যে দশটা সরকারি এবং পাঁচটা বেসরকারি। দু’মাস আগে মাত্র একটি ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা হত। ফলে নমুনা পরীক্ষাও কম হত।


রাজ্যের সব জেলাতেই যাতে করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়, সেজন্য উত্তরবঙ্গ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং মেদিনীপুর ইত্যাদি মেডিকেল কলেজগুলিকে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। রাজ্যে কনটেইনমেন্ট জোনের পরিধিও ক্রমশ বাড়ানো হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী। যা ডেটা আপডেট করা হচ্ছে ওয়েবসাইটে।

আলাপনবাবু বলেন, কাদের করোনা পরীক্ষা হবে আর কাদের হবে না, সেজন্য আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা আছে। অনেকে সেই নির্দেশিকা না মেনেই করোনা পরীক্ষা করতে চাইছে। সেজন্য ভুয়ো পরীক্ষাকেন্দ্র গজিয়ে উঠছে। একটি ভুয়ো ক্লিনিকের খবর পেয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইন অনুযায়ী।

আলাপনবাবু বলেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৬৭’টি কোভিড হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে করোনা চিকিৎসার জন্য। সেগুলিতে ৮০৩৬’টি বেড প্রস্তুত রয়েছে। ৮৬০’টি আইসিইউ রয়েছে এইসব হাসপাতালে। ২৭১’টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। তবে সব জায়গায় ভেন্টিলেটর কাজে লাগছে না। মাত্র তিরিশটি কেসে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়েছে।

আলাপনবাবু এদিন বলেন, লকডাউনের আগে থেকেই রাজ্য সরকার বিমান পরিষেবা বন্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেটা কার্যকর হয়েছে অনেক পরে। ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মাসে হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে আড়াই লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক উপকৃত হবেন। করোনায় ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধাদের জন্যও দশ লক্ষ টাকার বিমা চালু করা হয়েছে।

রাজ্যে প্রায় ছ কোটি মানুষের কাছে রোগ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য পৌছে গিয়েছেন আশাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই বিষয়ে রাজ্যের তৈরি বিশ্ব উপদেষ্টা কমিটির পরামর্শ ও সুপারিশকে কার্যকর করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব বুধবার নবান্নে জানান, কোভিডে মারা গেলে ডেথ সার্টিফিকেট কী হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। রাজ্য সরকার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছে, ডাক্তাররাই ডেথ সার্টিফিকেট দেবেন আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মেনে।