চিকিৎসকদের ধর্মঘটের জেরে স্তব্ধ আউটডোর পরিষেবা

চিকিত্সকরা জাতীয় মেডিকেল কমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। (Photo: IANS)

সারা দেশের মতাে পশ্চিমবঙ্গেও ধর্মঘটের জেরে ভােগান্তির শিকার হলেন অসংখ্য রােগীসহ তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরা। জাতীয় মেডিকেল কমিশন বিল লােকসভায় পাস হওয়ার প্রতিবাদে বুধবার সারা দেশজুড়ে মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসােসিয়েশন।

তাদের এই ধর্মঘটের জেরে এদিন রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি পরিষেবা ব্যাহত হয়। আডটডােরে দীর্ঘক্ষণ লাইন দেওয়ার পরেও চিকিৎসকদের দেখা না পাওয়ায় এনআরএস, এসএসকেএম সহ বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রােগীদের আত্মীয় পরিজনরা।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসােসিয়েশনের অন্যতম কর্তা শান্তনু সেন স্বীকার করে নিয়েছেন, ধর্মঘটের জেরে সাধারণ রােগীদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল পেশ করে মেডিকেল কলেজগুলিকে বেসরকারিকরণের পথে ঠেলে দিতে চাইছে। আমরা এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আগামী দিনে এই জনবিরােধী বিলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমাদের লড়াই জারি থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।


ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসােসিয়েশনের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, কোনও মুমূর্য রােগী হাসপাতালে আসলে তাঁকে ফেরানাে যাবে না। কোনও জরুরি পরিষেবা বিঘ্নিত হবে না। কিন্তু কার্যত দেখা গেল চিকিৎসকদের ধর্মঘটের জেরে আউটডাের পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। কোনও চিকিৎসকেরই দেখা মেলেনি। কোনও কোনও হাসপাতালে আউটডােরে চিকিৎসা পরিষেবা পুরােপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়ায় চরম ভােগান্তির মধ্যে পড়তে হয় রােগীদের।

এদিন সকাল থেকেই কলকাতা সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিতে ছিল রােগীদের লম্বা লাইন। মেডিকেল কলেজ, পিজি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে মুমূর্য রােগীদের ভিড় উপচে পড়ে।

মেডিকেল কলেজের গেট একসময় বন্ধ করে দিলেও পরে বিক্ষোভের জেরে গেট খুলে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। নদিয়ার ধুবুলিয়া থেকে পাঁচবছরের শিশুকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন সুদর্শন চৌধুরী। তাঁর ছেলে পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভেঙে গিয়েছে।

প্রথমে তিনি মেডিকেল কলেজে ছেলেকে নিয়ে যান। পরে তাকে পিজি হাসপাতালে পাঠানাে হয়। কিন্তু সেখানে গিয়েও চিকিৎসকদের দেখা মেলেনি। সকাল ছ’টা থেকে সারা দিন তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের ধর্মঘট ওঠার কোনও সম্ভাবনা না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে ছােট্ট ছবছরের শিশুটিকে ভর্তি করতে বাধ্য হন সুদর্শনবাবু।