বারাসতে ডাক্তার কাকলির বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন একজন বিজ্ঞানী? জোর জল্পনা!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বারাসত: বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের বিরুদ্ধে অবশেষে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পেল বিজেপি। ডাক্তার সাংসদ কাকলির বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন একজন বিজ্ঞানী। দলীয় সূত্রে এমনই জল্পনা। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বারাসতের সাংসদ কাকলিকে হারাতে যথাক্রমে একজন জাদুকর ও একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ডাক্তারকে প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু ভোট মার্জিনে কেউই তৃণমূলের এই অভিজ্ঞ নেত্রীর ধারে কাছে পৌঁছতে পারেননি। এবার সেই জায়গায় এবার নতুন চমক দিতে চলেছে বিজেপি। কাকলির সঙ্গে লড়াই দিতে প্রার্থী করা হচ্ছে একজন বিজ্ঞানীকে। তবে সবই এখনও জল্পনার স্তরে। সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

২০০৯ সালে বিজেপি-র সঙ্গে জোট ভেঙে কংগ্রেসের হাত ধরেন মমতা। প্রাক্তন ও প্রয়াত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পৌরোহিত্য সেই কাজ সম্পন্ন হয়। সেবার বারাসতে প্রার্থী হন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার ৯০১ ভোটে বাম প্রার্থীকে পরাজিত করেন। এই বছর তিনি তৃণমূলের প্রতীকে ৫ লক্ষ ২২ হাজার ৫৩০টি ভোট পেয়েছিলেন। এর আগে তিনি ডায়মন্ড হারবার, হাওড়া ও বালিগঞ্জ লোকসভায় প্রার্থী হন। কিন্তু তিনবারই তিনি পরাজিত হন। তিনি ২০১৪ সাধারণ নির্বাচনে বাসারত লোকসভা কেন্দ্র পুনরায় নির্বাচিত হন এবং ভোট পেয়েছিলেন ৫২৫৩৮৭ টি, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ফর‌ওয়াট ব্লকের মোর্তজা হোসেন। এই বছর বিজেপি-র প্রার্থী ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন জাদুকর পিসি সরকার। কিন্তু পিসি সরকার কাকলির প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারে কাছে আসতে পারেননি। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে কাকলি এক‌ই কেন্দ্র থেকে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবার তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৬৪৮৫৫৫ টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির ডাক্তার মৃণাল কান্তি দেবনাথ। এবারও কাকলি ভোট পেয়েছিলেন ৫,৩৮,২৭৫ টি। এই কাকলি ৪৬.৪৭% ভোট পেয়েছিলেনবছরে । যা পূর্বের চেয়ে ৫.০৮% বেশি।

এবার সেই কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে হারাতে একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানীকে ভোটের ময়দানে নামাচ্ছে গেরুয়া বাহিনী। তবে কে সেই প্রার্থী? তিনি কি শুধুই বিজ্ঞানী, নাকি রাজনীতির বরপুত্র? সেবিষয়ে কিছুই জানা যাচ্ছে না। এব্যাপারে বিজেপি নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এখনও সেই নাম তাঁরা প্রকাশ্যে আনতে পারেন নি। ফলে এই প্রার্থী নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। মাঝপথে সব কিছু পাল্টেও যেতে পারে। সেজন্য এই কৌতূহল নিরসনে অপেক্ষা করতে হবে বিজেপি-র দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশের দিন পর্যন্ত।


প্রসঙ্গত বিজেপি-র বারাসত জেলা নেতৃত্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য গেরুয়া সংগঠন এখানে দীর্ঘদিন ধরে দুর্বল হয়ে আছে। জেলার নেতারা সমস্ত গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় না করে বারবার গোষ্ঠী মেরুকরণ করে ভোট ব্যাঙ্ক নিঃস্ব করেছেন। এবার সেই সাংগঠনিক দুর্বলতার উর্দ্ধে উঠে কাকলির বিরুদ্ধে কেউ কি জাদু দেখাতে পারবেন? এই উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছু দিন।