অবস্থান স্পষ্ট করতে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে ২৪ ঘণ্টা সময়: হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্ট (File Photo: iStock)

আগামী সোমবার থেকে পশ্চিমাঞ্চলের ছয় জেলায় শুরু হচ্ছে জঙ্গলমহল উৎসব। এই উৎসব তিনদিন ধরে চলবে। করোনা আবহে এই উৎসব পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।

শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় জঙ্গলমহল উৎসব নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে।

কারণ, কোভিড আবহ চলছে। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসক বিবেচনা করুক তিনি ঠিক কি চাইছেন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার সিদ্ধান্ত হাইকোর্টকে জানাতে হবে। ফলে জঙ্গলমহল উৎসব নিয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।


উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক গত ৬ ডিসেম্বর করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জরুরি পরিষেবা ছাড়া ঝাড়গ্রাম জেলার সমস্ত অফিস তিনদিন বন্ধ রাখার তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এই অবস্থায় জঙ্গলমহল উৎসব করতে গেলে তিনি যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন সেই বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

সেইসঙ্গে হাইকোর্ট তার রায়ে আরও জানিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার অবস্থা যদি এরকম হয় তাহলে যে নির্ধারিত দিন জঙ্গলমহল উৎসবের জন্য ধার্য করা হয়েছে তা কখনোই জনস্বার্থমূলক কাজ হবে না।

এই নির্ধারিত দিনগুলিতেই (১৭-১৯ জানুয়ারি) উৎসব করতে হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। সে কারণে কোভিড আবহের মধ্যে জঙ্গলমহল উৎসব পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার সিদ্ধান্ত জানানো জন্য নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল উৎসব বন্ধের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন প্রতীক মৈত্র। আইনজীবী রাজনীল মুখোপাধ্যায়, প্রতীক মৈত্রর হয়ে মামলাটির শুনানিতে হাজির ছিলেন।

এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে রাজনীল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই উৎসব কিংবা মেলার বিপক্ষে আমরা নই। কারণ এই উৎসব আদিবাসীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই উৎসবের মাধ্যমে আদিবাসী সমাজের মানুষজন নিজেদের প্রতিভাকে তুলে ধরার সুযোগ পান।

কিন্তু, কোভিডের সময়ে এই উৎসব না হয়ে অন্য সময়ে ভালো। তা না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতি অনেক বেশি হবে। যদিও এই উৎসব প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের বক্তব্য ছিল কোভিডবিধি মেনেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

পঞ্চাশজনের বেশি মানুষজনকে জমায়েত করতে দেওয়া হবে না একসঙ্গে। সেইসঙ্গে আরটিপিসিআর নেগেটিভ থাকলে তবে উৎসব প্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের তরফে এই বক্তব্য হাইকোর্টে জানানো হয়।

এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে তার সিদ্ধান্ত এই উৎসব প্রসঙ্গে জানানোর জন্য ২৪ ঘন্টা সময় দেয়। এখন দেখার জঙ্গলমহল উৎসব আগামী ১৭ জানুয়ারি শুরু হয় কিনা?