মোরানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অসম চুক্তি কার্যকরের আশ্বাস

দেশে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে, শাসক থেকে বিরোধী প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে মসনদ দখলের লক্ষ্যে প্রচার চালাচ্ছে। দুর্নীতি থেকে কেলেঙ্কারি, ঋণ মুকুব থেকে শিল্পপতিদের আড়াল করা – শাসক ও বিরোধীকে একে অপরকে নানা প্রশ্নে বিঁধতে ছিটেফোটা জায়গাও বাদ রাখছে না।

Written by SNS March 31, 2019 3:28 pm

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Photo: IANS)

গুয়াহাটি, ৩০ মার্চ – দেশে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে, শাসক থেকে বিরোধী প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে মসনদ দখলের লক্ষ্যে প্রচার চালাচ্ছে। দুর্নীতি থেকে কেলেঙ্কারি, ঋণ মুকুব থেকে শিল্পপতিদের আড়াল করা – শাসক ও বিরোধীকে একে অপরকে নানা প্রশ্নে বিঁধতে ছিটেফোটা জায়গাও বাদ রাখছে না। আজ গান্ধিনগরে যখন অমিত শাহ মনোনয়ন পেশ করছেন, ঠিক তখনই অসমের  মোরানে নির্বাচনী জনসভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা ভোটে উত্তর পূর্ব ভারত যে গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝাতেই মোদি উত্তর পূর্ব ভারতের দুটি রাজ্যে নির্বাচনী জনসভা করেন। তিনি নিজে অরুণাচলে জনসভা করেন।

ডিব্রুগড়র মোরানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভায় বক্তব্যের শুরুতে প্রয়াত জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকাকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বলেন, ‘প্রকৃত অসম বাসীদের স্বার্থ, অধিকার, সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে প্রশাসন অঙ্গীকারবদ্ধ’। তারপর মোদি বলেন, ‘প্রশাসন অসম চুক্তি কার্যকর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু তাই নয়, রাজ্যের তাই আহম, মুট্টক, মোরান, ছুতিয়া, কোচ রাজবংশী, চা বাগান কর্মীদের তপশিলী উপজাতি গোষ্ঠীর ব্যাপারটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে’

তিনি বলেন, ‘অসম চুক্তি একবার স্বাক্ষর হয়ে গেলে, চুক্তির শর্ত মোতাবেক ১৯৭১ সালের মার্চের পর যারা অসমে ঢুকে বসবাস শুরু করেছেন জাতি ধর্ম নির্বিশেষে তাদের ফেরত পাঠানো হবে’। তার কথায়, অসম চুক্তি যাতে কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে প্রশাসন যারপরনাই চেষ্টা করা হচ্ছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন অসম চুক্তি কার্যকরের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেনি।

তিনি বলেন, ‘অসমের মানুষ, তাদের স্বার্থ ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রশাসন তাই অসম, মুট্টক, মোরান, ছুতিয়া, কোচ রাজবংশী, চা বাগানে উপজাতিদের ছটি সম্প্রদায়কে তপশিলী উপজাতি গোষ্ঠীর দিচ্ছে ‘।

বিরোধী দলকে একহাত নিয়ে মোদি বলেন, ‘স্বাধীনতার কয়েক দশক পরেও দেশের ৪০ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ ছিল, সেখানে ৫ বছরের মধ্যে দেশের প্রায় সব ঘরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে’। স্থানীয় জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রবল সমর্থন, আশীর্বাদ ও বিশ্বাসের জেরে আমি পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর উন্নয়ন করতে পেরেছি। আপনারাই প্রত্যক্ষভাবে আমাকে ভালো কাজ করার জন্য আস্থা দেখিয়েছেন’। অসম প্রশাসনের সাফল্যের খতিয়ান দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ লক্ষ মানুষের বাসস্থানের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পাশাপাশি ২৭ লক্ষ পরিবারের সকলে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা ভোগ করছেন। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদন মূল্যের খরচের জন্য অনুদান দেওয়া হয়েছে।

অসমের চা বাগান কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এক জন চা-ওয়ালাই তো অন্য চা-ওয়ালাদের কষ্ট বুঝতে পারেন। প্রশাসন চা বাগান কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চা বাগান শ্রমিক বেল্টের লাখ লাখ পরিবারকে দু’দফায় পাঁচ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন চার লক্ষ পরিবারকে মাসে বিনামূল্যে চাল ও দু কিলো করে চিনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে’। তিনি বলেন, ‘ আপনাদের এই চা-ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী অসম ও পশ্চিমবঙ্গের চা বাগান কর্মীদের উন্নয়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ ।

বিরোধীদের একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস দল তো জঙ্গিদের ভাষায় কথা বলে। ভারতে জঙ্গিদের কোন জায়গা নেই। পাক জঙ্গিগোষ্ঠী ও কংগ্রেস ছাড়া দেশের প্রতিটি মানুষ বিজেপি নেতৃত্বাধীন প্রশাসনকে নিয়ে খুশি’। ভিভিআইপি চপার কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসকে একহাত নেন। ১৪ আসনে তিন দফায় ১১, ১৮, ২৩ এপ্রিল ভোট গ্রহণ করা হবে।