আমাদের দেহকে সচল রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল পা। হাঁটাচলা, দেহের ভার বয়ে নিয়ে যাওয়া সবটাই এই পদযুগল করে থাকে। সেকারণে প্রতিদিন পায়ের উপর এই চাপ পড়ার ফলে পায়ের শিরায় এক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পায়ের শিরা ফুলে যায়, শিরার রং গাঢ় নীল আকার ধারণ করে। এর পাশাপাশি শিরাগুলি একসঙ্গে জড়িয়ে পেঁচিয়ে যায়। যা চামড়ার উপরে ভেসে ওঠে। মূলত পেশার কারণে যাদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে চিকিৎসক মহল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগটি ভেরিকোজ ভেইন নামে পরিচিত।
এক পরিসংখ্যানের মতে, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি পুরুষের। যাঁরা সাধারণত কাজের কারণে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন, বেশি হাঁটাচলা করতে হয় তাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হন বেশি। তবে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আরও একটি কারণ,যেসব ব্যক্তির দেহের ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি, তাঁদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এই রোগটি মূলত রক্ত প্রবাহের গতির সমস্যার কারণে হয়। দেহে রক্ত চলাচলের সময় যখন পায়ের শিরার মধ্যে থাকা ভাল্ভ ঠিকমতো কাজ না করে বা দুর্বল হয়ে পড়ে তখন রক্ত শিরা দিয়ে বিপরীত দিকে চলাচল করতে শুরু করে। ফলে শিরা গুলি ক্রমশ প্রসারিত হতে শুরু করে। তারপরেই রক্তনালী ফুলে ওঠে।
Advertisement
এই রোগের সাধারণত তেমন কোনও উপসর্গ থাকে না। চিকিৎসকদের মতে, পা ফুলে যাওয়া, পায়ে ব্যথা, ক্রমাগত অস্বস্তি, পা ভারী হয়ে যাওয়া, গোড়ালি ফুলে যাওয়া, এমনকি পায়ের ত্বকের রং বদলে যেতে দেখা যেতে পারে। পায়ের শিরাগুলি ফুলে, গাঢ় নীল রং ধারণ করে। শিরাগুলি জড়িয়ে-পেঁচিয়ে যায়। পরবর্তীকালে পায়ের মাংসপেশিতে টান অনুভব করেন অনেকে। চিকিৎসকদের বক্তব্য়, এই রোগে যদি কারও উপসর্গ না থাকে তাদের ক্ষেত্রে কোনও চিকিৎসা করানোর কোনও দরকার পড়ে না। তবে যদি কারও উপসর্গ থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন নিয়ে আসলে, দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই রোগ ঠেকানো সম্ভব হবে।
Advertisement
Advertisement



