• facebook
  • twitter
Tuesday, 9 December, 2025

গ্লকোমায় দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি কমাবে ‘ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন’ থেরাপি

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা এই থেরাপিটিকে আরও উন্নততর করে তোলার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন

অনেক সময় মধ্য চল্লিশে বা প্রবীণ বয়সে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হলে অনেকে মনে করেন ছানির কারণে এমন হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় চোখ পরীক্ষা করে দেখা যায় দৃষ্টি ক্ষীণ হওয়ার কারণ ছানি নয়, গ্লকোমা। চোখের এই রোগ সারানোর মত নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি নেই।এই রোগের সবরকম চিকিৎসাই অত্যন্ত জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এইরকম পরিস্থিতিতে ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন থেরাপি আশার আলো দেখাচ্ছে।

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা এই থেরাপিটিকে আরও উন্নততর করে তোলার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন।  গ্লকোমাতে  চোখের ভিতরে চাপ তৈরি হয়, যাকে বলা হয় ‘ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার’।চোখের যে অংশ দিয়ে ফ্লুইড প্রবাহিত হয়, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে তা চোখের ভিতর কোনো একটি স্থানে জমতে শুরু করে। এর ফলে অপটিক নার্ভে সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত চাপ। এই চাপ যত বাড়ে অপটিক স্নায়ু তত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই অপটিক স্নায়ুই মস্তিষ্কে পাঠায় ছবি ও সঙ্কেত।

Advertisement

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই স্নায়ু বেশিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হ্তে থাকলে দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ চলে যেতে পারে। গ্লকোমার কারণে দৃষ্টিশক্তি চলে গেলে, তা ফেরানো আর সম্ভব নয়। এই কারণেচিকিৎসকেরা যখন অস্ত্রোপচার করেন,  তখন তাঁদের লক্ষ্য থাকে চোখের ভিতরে তৈরি হওয়া ওই চাপকে নিয়ন্ত্রণ করা। নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ‘ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন’ সেই  কাজটিই করবে।

Advertisement

ডায়োড লেজারের কাজ হল চোখের ভিতরে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রশ্মি পাঠানো। প্রথমে রোগীর চোখের চারপাশের পেশিকে অবশ করার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।এর পরে চোখের সাদা অংশ  বা স্ক্লেরার মধ্যে দিয়ে পাঠানো হয় লেজার রশ্মি, যা সরাসরি গিয়ে পড়ে সিলিয়ারি বডিতে। এই সিলিয়ারি বডির কাজ হল ফ্লুইড তৈরি করে চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখা এবং চোখের ভিতরের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা।

সিলিয়ারি বডির ভিতরে থাকে সিলিয়ারি পেশি, যা চোখের লেন্সের আকার, চোখের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ এবং তরল উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। নির্দিষ্ট   তরঙ্গদৈর্ঘ্যের লেজার রশ্মি সিলিয়ারি বডির কিছু অংশ নষ্ট করে দেয়। এতে সিলিয়ারি বডি   থেকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রায় তরলের উৎপাদন বন্ধ হয়। ফলে চোখের ভিতরের চাপ কমে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা আর থাকে না।

ডায়োড লেজার থেরাপিতে চোখ কাটাছেঁড়া করার দরকার হয় না । এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সক্ষম হন। এই চিকিৎসার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে না। ভারতে ‘ডায়োড লেজার সাইক্লোফোটোকোঅ্যাগুলেশন’ করার জন্য খরচ পড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তবে লেজার থেরাপির অনেকরকম ভাগ রয়েছে। রোগীর চোখের অবস্থা বুঝে চিকিৎসা করা হয়। অনেক সময় এই চিকিৎসায় ১ লাখের বেশিও খরচ হতে পারে।

Advertisement