• facebook
  • twitter
Sunday, 10 November, 2024

পূর্ণিমা কান্দুর বাড়িতে দল তদন্ত শুরু সিবিআইয়ের

হত্যা তদন্তে পুরুলিয়ায় এসে পুরোদমে তদন্ত শুরু করে দিল সিবিআই। বুধবার রাত্রে পশ্চিমবঙ্গের ঝালদা থানায় পৌঁছন সিবিআইএর আধিকারিকরা।

সিবিআই (File Photo: IANS)

হত্যা তদন্তে পুরুলিয়ায় এসে পুরোদমে তদন্ত শুরু করে দিল সিবিআই। বুধবার রাত্রে ঝালদা থানায় পৌঁছন সিবিআইএর আধিকারিকরা। প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে সেখানে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পর তারা ঝালদার বনদফতরের বাংলোয় চলে যান।

আপাতত এখানেই সিবিআইয়ের ক্যাম্প করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তারা সোজা চলে আসেন পুরুলিয়া জেলা আদালতে। মুখ্য বিচার বিভাগিয় ম্যাজিস্ট্রেট রীনা তালুকদারের এজলাসে যান তারা।

বিকেল নাগাদ এখান থেকে আবার ঝালদার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিন আধিকারিক। এদিন আগাগোড়াই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যাবস্থায় ছিল সিআরপিএফ। ঝালদায় পৌঁছে নিহত তপন কান্দুর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন আধিকারিকরা।

প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট কথা বলার পর তারা তপন কান্দুর এক ভাইপো বীরবলকে নিয়ে চলে যান ঘটনা স্থলে। ঝালদা বাঘমুণ্ডী রোডে যেখানে তপন কান্দু গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন সেখানে গিয়ে ছবি তোলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।

কথা বলেন স্থানীয় বেশ কয়েক জনের সঙ্গে। খোঁজ নেন ঘটনা স্থলের কাছাকাছি বাড়িগুলি নিয়েও। এলাকার গ্রামগুলির বিষয়ে বিস্তৃত তথ্যও নেন তারা সন্ধ্যে নাগাদ ঘটনা স্থলে পৌঁছে তারা কিছুক্ষণ থেকে অবশ্য আবার ফিরে যান নিজেদের অস্থায়ী ক্যাম্পে।

সবে মিলে প্রথম দিনেই বলতে গেলে তদন্ত অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যায় সিবিআই। এদিন জেলা আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী মুখ্য বিচারবিভাগিয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তদন্ত হাতে নেবার কথা জানান। তিনি যে এফ আই আর হয়েছে তা নিয়ে রেজিস্ট্রার কথা বলেন।

এনিয়ে কিছুটা জটিলতা দেখা দিলে সিবিআইয়ের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের একটি রুলিং এর কথা বলেন। এরপর যাবতীয় কাগজপত্র জমা দেবার নির্দেশ দেন বিচারক। সেই মতো সিবিআই-আইনজীবী কাগজপত্র জমা দেন।

তাতে দেখা যায় ৬ এপ্রিল কলকাতায় সিবিআই য়ের পক্ষে ডি আই জি অখিলেশ কুমার সিং এস সি বি থানায় একটি আলাদা এক আই আর করেছেন। আদালতের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে এই এফ আই আরটি জেলা পুলিশের থেকে যে এফ আই আর করা হয়েছিল তার হবহু প্রতিরূপ।

আইনজীবীরা অবশ্য বলেন নিয়ম মেনেই সব কাগজপত্র এদিন আদালতে জমা করেছে সিবিআই। জেলা পুলিশের কাছ থেকে সিবিআইয়ের কাছে তপন কান্দু হত্যা মামলাটির হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এদিনই শুরু হয়ে গেছে।

তবে এনিয়ে সিবিআই-য়ের আইনজীবী বা কোন আধিকারিক সাংবাদিকদের কাছে কোন কথা বলতে চাননি। ঝালদায় নিহত তপন কান্দুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী পূর্ণিমা এবং ভাইপো মিঠুনের সঙ্গে কথা বলেন সি বি আই আধিকারিকরা।

পূর্ণিমা দেবী বলেন বিভিন্ন বিষয় তার কাছে তথ্য নিয়েছেন আধিকারিকরা। তিনি সব কিছু বলেছেন। তদন্ত শুরু হওয়ায় খুশি তিনি। অন্যদিকে বুধবার ঝালদার বৈষ্ণব পাড়ায় অস্বাভাবিক ভাবে মৃত নিরঞ্জন বৈষ্ণবের বাড়িতে এদিন জেলা পুলিশের একটি তদন্তকারী দল যায়।

সেখানে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করে মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এদিনই মৃতের দাদা নেপাল বৈষ্ণব ঝালদা থানায় তার ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তার ভাইয়ের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ আনেন।

তার ভাইকে দিয়ে সাদা কাগজে লিখিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন এদিন সিবিআই নিয়ে কিছু না বললেও নিরঞ্জনের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান। উল্লেখ্য ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল নিরঞ্জনের দেহ।

একটি সুই সাইড নোটও পাওয়া গেছিল দেহের পাশ থেকে। তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু জানান, ‘বগটুই-কাণ্ডে তো সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করেনি রাজ্য, তবে মার স্বামীর খুনের ক্ষেত্রে কেন বিরোধিতা করা হচ্ছে।

সিবিআই তো ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। তবে এখন কেন বিরোধিতা? আমার স্বামী কংগ্রেস করে বলেই কি বিরোধিতা? ঘটনায় অভিযুক্তদের আড়াল করতেই কি সিবিআই তদন্তে বাধা দিচ্ছে সরকার।’

পাশাপাশি পুরুলিয়ার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো জানান, ‘রাজ্য যে আদালতে যাবে আমরা তার বিরোধিতা করে সেই আদালতে যাব।’ ওয়াক্বিহাল মহল মনে করছে এই খুনে সরাসরি তৎকালীন আইসির নাম জড়িয়েছে, তাই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কে সিবিআই জেরা এড়াতে এই পদক্ষেপ রাজ্যের।