ইডেনের বাইরে সমর্থকদের বিক্ষোভ

ইডেনের সামনে বিক্ষোভ। ইডেনের গেট না খোলায় বিক্ষোভ দেখান প্রায় হাজার পাঁচেকের বেশি নাইট সমর্থক। তাতেও কাজ না হওয়ায় গোষ্ঠ পাল সরণি অবরোধ করে তারা।

Written by SNS March 21, 2019 4:48 pm

ইডেনে অনুশীলনে মত্ত নাইট খেলোয়াড়রা (Photo IANS)

নিজস্ব প্রতিনিধি – আইপিএলের ঢাকে কাঠি পড়তে আর বেশি দিন বাকি নেই। তবুও উৎসাহী মানুষরা আর নিজেদের ধরে রাখতে পারছেন না। যেন এখন থেকেই মাঠে ঢুকে নিজেদের দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি দেখতে দেখতে চাই। অধীর আগ্রহে রয়েছে প্রত্যেকেই। বারোটা বছর আইপিএল ক্রিকেট যেভাবে গড়িয়েছে সেখানে এই প্রতিযোগিতাটি সকলের মন জয় করে  নিয়েছে। তাই এখন সাধারণ ক্রিকেট পাগল সমর্থকেরা মাঠের মধ্যে ঢুকে দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতিটাও দেখতে চান। ইতিমধ্যে ধনিদের প্র্যাকটিস দেখার জন্য চেন্নাই স্টেডিয়াম এর দ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছে। ধোনিরা প্র্যাকটিস করছে নাকি প্রতিযোগিতায় গ্রুপের খেলা চলছে সেটা সমর্থকদের উপস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছিল না। বলে রাখা ভালো, দু’বছর আইপিএল ক্রিকেট সাসপেন্ড থাকার পর গতবছর প্রতিযোগিতায় ফিরে আসার পরই চেন্নাই দলের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি দেখার জন্য। এবারও সেই পদক্ষেপ দেখা গেল চেন্নাই ফ্রাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে। সেই পদক্ষেপে পা মেলাতে গিয়ে কিছুটা বিপাকের মধ্যে পড়তে হলো নাইটদের। মঙ্গলবারই শোনা যাচ্ছিল, যে বুধবার ইডেনের দ্বার খোলা হবে সেখানে বিনামূল্যে দর্শকরা মাঠে ঢুকে নাইটের প্রস্তুতি দেখতে পারবে। এই খবরটা শোনার পর নাইট সমর্থকরা তাদের কাজকর্ম ফেলে ছুটে এসেছিল ইডেনের উদ্দেশ্যে তাদের প্রিয় দলের খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি দেখার জন্য। কিন্তু, এখানেই ঘটে গেল বড় বিপত্তি ইডেনে আসামাত্র নাইট সর্মথকরা তাদের দলের খেলা দেখা থেকে প্রথমে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। বেঁধে যায় খণ্ডযুদ্ধ।

ইডেনের সামনে বিক্ষোভ। ইডেনের গেট না খোলায় বিক্ষোভ দেখান প্রায় হাজার পাঁচেকের বেশি নাইট সমর্থক। তাতেও কাজ না হওয়ায় গোষ্ঠ পাল সরণি অবরোধ করে তারা। শেষ পর্যন্ত পিছু হটে সিএবি। প্রায় ৪০ মিনিট পর প্রতিশ্রুতি মত গেট খোলা হয় ইডেনের। চেন্নাইয়ের মতন নাইটরা পদক্ষেপ নিয়েছিল ইডেনে দলের প্রস্তুতির সময় যাতে সমর্থকদের ঢুকানো হয়। বুধবার ইডেনে নাইটদের প্র্যাকটিস দেখার জন্য সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। মঙ্গলবার রাতে নাইট  রাইডার্সের ট্যুইটারে জানানো হয় নাইটদের প্র্যাকটিস দেখার জন্য ফ্রি-তে ঢোকা যাবে স্টেডিয়ামে। রীতিমতন বিকাল সাড়ে চারটের সময় দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ইডেনের সতেরো নম্বর গেট। বিনা প্রবেশমূল্য ইডেনের ‘এল’ ব্লকের গ্যালারি থেকে নাইট সর্মথকরা উপভোগ করতে পারবেন দীনেশ কার্তিকদের অনুশীলন। প্রতিদিনই নাইট ক্রিকেটাররা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। আরে এদিনও খেলার কথা ছিল। প্রস্তুতি ম্যাচ মানেই রবিবার নাইটদের মাঠে নামার আগেই সুনীল নারিন, রাসেল ও ক্রিস লিনদের ব্যাটের ঝড় দেখা যাবে। সকলের মনের মধ্যে আশা ছিল অনেক। মনের মধ্যে অনেক আশা নিয়ে সকলেই চারটের আগেই ইডেনের সামনে হাজির হয়েছিলেন। কেউ বা কলেজ থেকে বা কেউ অফিস ছুটি করে চলে এসেছিলেন প্রিয় দলের প্র্যাকটিসের সাক্ষী থাকার জন্য। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা সাড়ে চারটে পেরিয়ে গেলেও খোলেনি ইডেনের গেট। ফলে নাইট সমর্থকরা সতেরো নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তাতেও কাজ না হওয়ায় পথ অবরোধ করেন তারা। ফলে ব্যস্ত রাস্তায় যানজটের শুরু হয়। প্রায় চল্লিশ মিনিট পর ইডেনের গেট খোলা হয়। তবে সতেরো নম্বর গেট খোলার কথা থাকলেও, খোলা হয় তেরো নম্বর গেট। ততক্ষণে অবশ্য ইডেনে নাইটদের প্র্যাকটিস শুরু হয়ে গিয়েছিল। আইপিএল শুরুর আগেই ইডেন উদ্যান খবরের শিরোনামে। পাশাপাশি যতদিন গড়াচ্ছে তত মহমেডান মাঠের টিকিট কাউন্টারের সামনে মানুষের লম্বা লাইন পড়ছে। টিকিট কাউন্টারের সামনে যাতে কোনও টিকিট নিয়ে গণ্ডোগোল না বাঁধে সে জন্য কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোড়পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়। এবং ঘোড়পুলিশের কর্তারা টিকিট কাউন্টার সহ গোটা ময়দান চত্বর টহল দিতে শুরু করেন। আর টিকিটের কালোবাজারিও যাতে না হয় সেদিকেও নজর রয়েছে। তবে, এখনো সময় বাকি রয়েছে, সেই অর্থে টিকিট কাউন্টারের সামনে আরো ভিড় বাড়বে আস্তে আস্তে তা আগাম বলা যায়।

মাঠের বাইরে কি হয়েছে সেদিকে কোনও নজর ছিল না নাইট ক্রিকেটারদের। মহড়ায় নামার আগে নাইট ক্রিকেটাররা নিজেদের জোরদার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। নৈশ্যালোকে হালকা ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে নাইট ক্রিকেটাররা জোরদার প্র্যাকটিস করে নেন। কোনও সময়ের জন্য দলের ক্রিকেটারদের ফাঁকি দিতে দেখা গেল না অনুশীলনে। তবে, হ্যাঁ প্রস্তুতির মাঝেই চলছিল দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে খুনসুটি। সব মিলিয়ে দ্বাদশ আইপিএলে খেলতে নামার আগে অন্যান্য দলগুলির মতন নাইটরাও তাদের তরুণ ব্রিগেড নিয়ে জোরদার প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে তা আগাম বলা যায়। গতবার কোয়ালিফায়ারে পৌঁছেও ট্রফির দৌড় থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল নাইটদের তাই এবার আর নাইটরা পুনরায় সেই ভুলটা করবে না সেটা বলাই বাহুল্য।

এদিকে নাইট দলের চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদবের মুখে অন্য সুর, ‘বোলারদের থেকে ধোনি উইকেটের পিছনে থেকে ম্যাচের পরিস্থিতিটা ভালো বুঝতে পারেন। আর ধোনিভাই উইকেটের পিছনে থাকায় আমরা বোলিংয়ে অনেকটা সাহস পাই। আর কোন জায়গায় কিভাবে বল করতে হয় কিভাবে চাপ সৃষ্টি করতে হয় ব্যাটসম্যানের ওপর সেটা ধোনিভাইয়ের থেকে ভালোভাবে জানতে পারি ও বুঝতে পারি। ধোনিভাই আমাদের বোলারদের কাজটা অনেক সহজ করে দেন। ধোনিভাই না থাকলে আমাদের একটু হলেও চাপের মধ্যে পড়তে হয়।’

‘ধোনিভাই ম্যাচের পরিস্থিতিটা বোলারদের থেকে বেশি ভালো বুঝতে পারেন। সব সময় তিনি দলের বোলারদের সাহায্য করেন এবং আমাদের এসে ব্যাপারটা বোঝান। যখন উইকেটকিপার আমাদের মতন বোলারদের সাহায্য করেন তখন আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। অনেক সময় বোলাররা ম্যাচের পরিস্থিতিটা ভালো করে বুঝতে পারে না। কিন্তু উইকেটকিপার সেই ব্যাপারটা ভালো করে বুঝিয়ে যায়। মাহিভাই একদম আমাদের জন্য সেই কাজটা করে যান। ধোনিভাইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে সেটা আমাকে আর আলাদা করে আপনাদের বলে দিতে হবে না। তাঁর অভিজ্ঞতাটা তিনি কাজে লাগান এবং সেটা আমাদের শেয়ার করেন আর আমরা ধোনিভাইয়ের কথা মতন কাজ করে যাই এবং সাফল্য তুলে নিই দলের জন্য,’ এমন কোথাও জানান কুলদীপ যাদব।