বড়লোকেরা চৌকিদার রাখে, গরীবরা নয় : প্রিয়াঙ্কা

দাদা রাহুল গান্ধির হাত ধরে রোড শো দিয়ে উত্তরপ্রদেশে পা রেখেছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা।

Written by SNS March 20, 2019 5:26 am

প্রিয়াঙ্কা (Photo: IANS)

লখনউ, ১৮ মার্চ – দাদা রাহুল গান্ধির হাত ধরে রোড শো দিয়ে উত্তরপ্রদেশে পা রেখেছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা। লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী সোমবার একাই প্রচার সারলেন। তবে কিছুটা অভিনবত্ব রয়েছে নেত্রীর প্রচারে। তিনদিন ধরে জলপথেই প্রচার করবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা।

সোমবার প্রয়াগরাজ থেকে গঙ্গাবক্ষে প্রচার শুরু করেন প্রিয়াঙ্কা। প্রচারের বেশিরভাগটাই ছিলম মোদি বিরোধিতা। স্বঘোষিত চৌকিদার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃর বক্তব্য, ‘বাড়িতে চৌকিদার রাখেন বিত্তশালীরা। গরিব মানুষের সেই বিলাসিতা দেখানোর সাধ্য নেই। তারা নিজেরাই নিজেদের পাহারা দেন’।

প্রয়াগরাজের মানাইয়া ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করেন প্রিয়াঙ্কা। নেতৃকে দেখতে নদির দুই তীরে ভিড় জমান কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। শুধুমাত্র প্রিয়াঙ্কাকে দেখতে সাধারণ মানুষ ভিড় জমান। নৌকা থেকে ভিড় লক্ষ্য করে হাত নাড়েন তিনি। জনসংযোগের কাজটা নৌকা থেকেই সারলেন। ভিড়ে উপস্থিত জনগণের কোথা শুনতে চান প্রিয়াঙ্কা।

গঙ্গাঘাটে দাঁড়িয়েই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপির অন্যান্য নেতা-নেতৃদের নামের আগে ট্যুইটারে ‘চৌকিদার’ শব্দটির সংযুক্তি নিয়ে প্রিয়াঙ্কার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। প্রিয়াঙ্কা উত্তরে বলেন, ‘নামের আগে কি বসাবেন তা সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তবে এক কৃষক ভাইয়ের সঙ্গে কথা হল আমার। উনি জানালেন বিত্তশালীদের বাড়িতেই চৌকিদার থাকে। আমাদের মতো গরিব মানুষের সে সাধ্য কোথায়? আমরা নিজেরাই নিজেদের চৌকিদার’?

গঙ্গাবক্ষে কিছুক্ষণ কাটিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা জনসভা করেন দুমদুমা ঘাটের কাছাকাছি। জনসভায় বক্তৃতা রাখার সময় কংগ্রেস নেত্রী জানান, ‘গত ৫ বছরে দেশে যে হারে বেকারত্ব বেড়েছে তাঁর সঙ্গে তুলনা করলেন গত ৪৫ বছরে তা হয়নি। কৃষকদের সমস্যা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। কেবল ধনী ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা পাইয়ে দিচ্ছে। আমরা ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিই না। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কৃষিঋণ মকুব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। গত বছর রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে তা করে দেখানো হয়েছে। ক্ষমতায় আসার ১০ দিনের মধ্যে কৃষকদের ঋণ মকুব করে দিয়েছি’।

কিছুটা সতর্ক হয়েই দল এবং দাদার জন্য ভোট চাইলেন প্রিয়াঙ্কা। জানালেন, ‘কারও দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে বিচার বিবেচনা করেই ভোট দেবেন আপনারা। কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধিকে ভোট দিলে ঠকবেন না। এই দেশ আপনাদের। একে রক্ষা করার দায়িত্বও আপনাদের। আপনারা আছেন বলেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে পারছি। তাই কাকে ক্ষমতায় আনবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনাদের হওয়া উচিত। আশা করি কাউকে নিজের মধ্যে বিভাজন ঘটানোর সুযোগ দেবেন না। কারণ এতে আপনাদের কোনও উপকার হবে না। লাভবান হবে অন্য কেউ’। তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে আসার পিছনে যে দেশের সঙ্কট দায়ী সেকথাই মনে করিয়ে দিলেন প্রিয়াঙ্কা।

লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা। তিনি সোমবার থেকে প্রয়াগরাজ থেকে বারাণাসী পর্যন্ত গঙ্গাবক্ষে তাঁর তিন্দিনের প্রচার যাত্রা শুরু করলেন। রবিবারই লখনউয়ে পৌঁছে যান প্রিয়াঙ্কা। সোমবার সকালে প্রয়াগরাজে বড়ে হানুমান মান্দিরে পুজো সেরে মানাইয়া ঘাট থেকে বারাণসীর দিকে রওনা দেন। ভাদোহি, মির্জাপুর হয়ে বুধবার বারাণসী পৌছবেন প্রিয়াঙ্কা। সেখানে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর পৈতৃক বাড়িও ঘুরে দেখবেন বলে দোলীয় সূত্রে জানা গেছে।