শিল্পকলায় আধুনিকতার স্বরূপ

Written by SNS February 22, 2018 12:22 pm

শিল্পকলায় আধুনিকতার স্বরূপ

সামনের দিকে চলতে চলতে শিল্পকলা বরাবরই পিছন ফিব়ে তাকায়। অতীতের উৎস থেকে নিজেকে নবীকৃত কব়ে নেয়। আধুনিকতা কী? যা বতৰ্মান তাই কি আধুনিক? বতৰ্মানেব সঙ্গে আধুনিকের সম্পর্কের স্বরূপ কি? একে কি অন্যের সহযোগী না পব়িপন্থী?

শিল্পকলায় আধুনিকতা প্ৰসঙ্গ আলোচনায় এই সব প্ৰশ্ন উঠে আসে। তাই আধুনিকতার কোনও নিৰ্দিষ্ট বা নির্ধারিত মাপকাঠি নেই। ‘ভাবতীয় শিল্পকলায় আধুনিকতা’ (সমপাদনা. উৎপল সেনগুপ্ত) পারুল প্ৰকাশনী থেকে সদ্য প্ৰকাশিত।

উৎপল সেনগুপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা সাহিত্যিক সবলানন্দ সেনের পুত্ৰ। স্বর্গীয় পিতৃদেবের কাছে নির্ভীক সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। সাংবাদিক জীবনে ছোট গল্প নিবন্ধ প্ৰবন্ধও লিখেছেন।

সাংবাদিকতাও কব়েছন আবার পরবর্তীকালে অন্য চাকব়িতে গিয়ে অন্য ধরনের কাজকমৰ্ও সামলেছেন। তিনি কেন এই শিল্পকলায় আগ্ৰহী হলেন? এই বইয়েব প্ৰাককথনে উৎপলবাবু কবুল কব়েছেন ‘সালটা ১৯৭৬ বিড়লা অ্যাকাডেমিতে পটশিল্পী সীতেশ রায়ের একক চিত্ৰ প্ৰদশৰ্নী। সেই উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন প্ৰখ্যাত সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্ৰ শিল্পী সুনীলমাধব সেন এবং রাজেশ্বরী অধ্যাপক ড কল্যাণকুমার গঙ্গোপাধ্যায়’।

‘প্রেমেন্দ্রবাবুর কথায় এই ভাবতীয় চিত্ৰকলার আধুনিকতা প্ৰসঙ্গ উঠে আসে এবং এ বিষয়ে বই প্ৰকাশ করার কথাও। সেখান থেকে উৎসাহ এবং গুৰুজনদেব আজ্ঞা শিব়োধার্য কব়ে এতদিন পব়ে এই বই প্ৰকাশ।’

এই বইয়েব ভূমিকায় কবি তরুণ সান্যাল বলেছেন ‘এই বইটিতে সংকলিত রচনাগুলিতে আমাদের যথেষ্ট উপকৃত হওয়ার উপকরণ আছে।’ লেখকসূচি নেহাত ছোট নয়। যাঁদেব লেখা এখানে সংকলিত হয়েছে তাঁরা হলেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত রবীন মণ্ডল যোগেন চৌধুবী সনৎ কর পবিত্ৰকুমার রায় লালুপ্ৰসাদ সাউ গণেশ হালুই প্ৰকাশ কমৰ্কার প্ৰশান্ত দাঁ বরুণ রায় জহর দাশগুপ্ত তপন মিত্ৰ নিরঞ্জন প্ৰধান ধীরাজ চৌধুরী অরুণকুমার চক্ৰবর্তী নিখিলেশ দাস এবং উৎপলবাবুব আলাপচাব়িতা মকবুল ফিদা হুসেনেব সঙ্গে।

সূচপিত্ৰের দীর্ঘ লেখক সূচি থাকা সত্ত্বেও মনে হয় সমপাদক যে পব়িধিতে এই কাজ কব়েছেন তার বৃত্তকে আরও বাড়ানো উচিত ছিল। বহু উল্লেখযোগ্য লেখক ও শিল্পীদের অবসথান নেই এই বইতে। তবু বলা যায় এই ধরনের বই সমপাদনাব ক্ষেত্ৰে সমপাদককে বহু বাধাবপিত্তি অতিক্ৰম কব়ে বই প্ৰকাশ কবতে হয়।

উৎপলবাবু এই সীমিত পব়িধির মধ্যে প্ৰশংসনীয় কাজ কব়েছেন। এই সময়েব বিশিষ্ট প্ৰথিতযশা শিল্পীদের আধুনিকতার মতবাদ সংকলিত কব়েছেন এই বইতে। বিশিষ্ট কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তেব মূল্যবান লেখাটি এই বইয়েব সমপদ। প্ৰয়াত শিল্পী বৰরুণ রায়ের লেখা প্ৰশংসনীয়।

তাঁকে এই বইতে স্থান দিয়ে সমপাদক যথাযোগ্য সম্মান দেখিয়েছেন। বরুণবাবু চিরটাকাল প্ৰচাব়ের আলোর বহুযোজন দূব়ে অবস্থান কব়ে গেছেন। রবীন মণ্ডল যোগেন চৌধুবী গণেশ হালুই সনৎ কর প্ৰকাশ কমৰ্কার ধীরাজ চৌধুরী ঈশা মহম্মদ অমিতাভ সেনগুপ্ত এবং নিখিলেশ দাসেব কলমে উঠে এসেছে আধুনিকতার স্বরূপ।

বিশিষ্ট শিল্পী রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প সমপৰ্কে কিছু কথা বা প্ৰশান্ত দাঁ-এব চিত্ৰকলায় আধুনিকতা প্ৰসঙ্গ এই বইয়ের মর্যাদা বাড়িয়েছে এ কথা বলাই যায়। একটি উল্লেখযোগ্য লেখা হল বিশিষ্ট শিল্পী অমিতাভ সেনগুপ্তেব লেখা ‘শিল্পেব বিচ্ছিন্নতা ও আধুনিকতা’।

বিশিষ্ট শিল্পী যোগেন চৌধুবী তাঁব নিবন্ধে বিশ্লেষণ কব়ে দেখিয়েছেন ‘চিত্ৰশিল্পে আধুনিকতা’কে যা অনবদ্য এবং যথার্থ। পবিত্ৰকুমাব রায়েব চিত্ৰ দশৰ্নের প্ৰাসঙ্গিকতা সূত্ৰে অন্য মাত্ৰায় প্ৰতিষ্ঠিত। বিশিষ্ট শিল্পী গণেশ হালুইয়েব লেখায় কলকাতার আর্ট কলেজেব স্মৃতিচাবণেব ভূমিকায় উঠে এসেছে সেই সব প্ৰখ্যাত শিল্পীর কথা যাঁবা এই কলেজেব মাস্টারমশাই ছিলেন।

বিশিষ্ট শিল্পীরা যেমন ববীন মণ্ডল ঈশা মহম্মদ বা লালুপ্ৰসাদ সাউয়ের লেখায় শিল্পভাবনায় নানা দিক উঠে এসেছে। পাঠকদের কাছে এই বই এক অন্য মাত্ৰায় অন্য আবেদনে প্ৰতিষ্ঠিত হবে এ আশা রাখাই যায়।

ঝকঝকে ছাপা এবং উপযুক্ত বাঁধাই এই ১০৪ পৃষ্ঠার বইটি। লেখাব পাশাপাশি শিল্পীদের কাজের প্ৰতিলিপি যথাযোগ্য সম্মানে অবসথান কবছে। আধুনিকতার স্বরূপ সন্ধানেব এই পব়িভ্ৰমণ বইটিব পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়।